প্রায় দু’বছর ধরে চলা করোনা মহামারিতে ইতোমধ্যে বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধকোটিরও বেশি মানুষ। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণঘাতী এই রোগটির প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর পাশাপাশি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কালও।
কিছু দেশে অবশ্য বৃদ্ধিও পেয়েছে মানুষের আয়ু।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, মহামারিবিদ ও মেডিকেল পরিসংখ্যানবিদ নজরুল ইসলামের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, করোনা মহামারি রাশিয়া, বুলগেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, পোল্যান্ডসহ ৩১টি দেশের মানুষের মোট প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ বছর কেড়ে নিয়েছে।
কোনো দেশের মানুষের গড় আয়ু হিসাবের ক্ষেত্রে ‘প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল’ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচক। একটি দেশের সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে সেই দেশের মানুষ কত বছর বাঁচবেন তা নির্ধারিত হয় প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল অনুযায়ী।
এ কারণে কোনো দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটলে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বাড়ে; আবার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে, অর্থাৎ যুদ্ধ-সংঘাত-অস্থিতিশীলতা-দুর্ভিক্ষ-মহামারি হলে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল কমে।
নজরুল ইসলাম তার গবেষণার কাজে ৩৭টি দেশ ও অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। গবেষণা শেষে জানা গেছে, ৩১ দেশের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল হ্রাস পেলেও এই সূচকে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে ৬টি দেশের ক্ষেত্রে অর্থাৎ তাদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বেড়েছে।
এগুলো হলো- তাইওয়ান, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও দক্ষিণ কোরিয়া।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালে ইউরোপে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারির কারণে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল যে পরিমাণ কমেছিল, করোনা মহামারির ফলে সেই তুলনায় ৫ গুণেরও বেশি পরিমাণ আয়ুষ্কাল হারিয়েছে মানুষ।