ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় চার সপ্তাহ আগে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৮৯টি দেশে ছড়িয়েছে। স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলে ওমিক্রনের সংক্রমণ দেড় থেকে ৩ দিনের মধ্যে দ্বিগুণ হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়াতে থাকা এই ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপারে শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই তথ্য জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির হালনাগাদ তথ্যে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা বলেছে, যেসব দেশের জনসংখ্যার মাঝে উচ্চ মাত্রার ইমিউনিটি রয়েছে, সেসব দেশেও ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এটি ভাইরাসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়ানোর সক্ষমতা, অধিক সংক্রামক হয়ে ওঠা অথবা উভয় কারণে হচ্ছে কি-না তা স্পষ্ট নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পরপর গত ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। তবে এই ভাইরাসের কারণে গুরুতর অসুস্থতা তৈরি হচ্ছে কি-না সে ব্যাপারেও এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও বলেছে, ওমিক্রনের ক্লিনিক্যাল তীব্রতার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি। এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতা এবং টিকাদান ও আগের সংক্রমণের কারণে গড়ে ওঠা ইমিউনিটিকে এটিকে ফাঁকি দিতে পারে কি-না, সে ব্যাপারে বোঝার জন্য আরও তথ্য-উপাত্ত দরকার।
সংস্থাটি বলছে, ওমিক্রনের ব্যাপারে তথ্য এখনও সীমিত। এছাড়া আজ পর্যন্ত ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার ব্যাপারে কোনো পির-রিভিউড প্রমাণ নেই।
ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়ছে এবং কিছু কিছু অঞ্চলে হাসপাতাল রোগীতে উপচে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
‘যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এছাড়া সংক্রমণের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। অনেক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা দ্রুত হিমশিম খেতে পারে।’
ইউরোপে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ফ্রান্সে আগামী বছরের শুরুর দিকে আধিপত্যশীল হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স। যুক্তরাজ্য থেকে ফ্রান্সে প্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ভ্রমণ বিধি-নিষেধ আরোপের কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার তিনি এই মন্তব্য করেন।
ওই অঞ্চলে যুক্তরাজ্যেই এখন পর্যন্ত সবেচেয়ে বেশি ওমিক্রন রোগী পাওয়া গেছে। শুক্রবারও দেশটিতে ১৫ হাজার মানুষের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। মহাদেশজুড়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ সামলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সংক্রমণের ঢেউয়ের লাগাম টানতে চাওয়া জার্মানি, রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডস সরকার শুক্রবার নতুন করে অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপে ইতোমধ্যে ৮ কোটি ৯০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১৫ লাখ।