ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একমাসে রাশিয়ায় ৭১ হাজারেরও বেশি প্রাণহানি হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান বলে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। এক মাসে এতো বিপুল প্রাণহানি রাশিয়ার জন্য একটি রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থা রোসস্ট্যাট জানায়, গত নভেম্বর মাসে রাশিয়ায় প্রাণ হারানো সর্বমোট ৮৭ হাজার ৫২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তবে সংস্থাটি মনে করে, প্রাণ হারানো এসব মানুষের মধ্যে ৫ হাজার ৯২৪ জনের মৃত্যুর কারণ করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট নয়। এছাড়া ৭১ হাজার ১৮৭ জনের মৃত্যু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণেই হয়েছে বলে নিশ্চিত হয় সংস্থাটি।
সারা বিশ্বে করোনায় বিপর্যস্ত দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার অবস্থান বেশ ওপরের দিকেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও দেশটিতে প্রতিদিনই প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯২৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপের এই দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৮ হাজার মানুষের।
তবে সরকারি হিসেবে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮ হাজার বলা হলেও রোসস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। অবশ্য বিপুলসংখ্যক এই প্রাণহানির পরও রুশ কর্তৃপক্ষ করোনা মহামারিকে প্রথম থেকেই খাটো করে দেখছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মহামারি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপে শিথিলতার অভিযোগও রয়েছে।
এএফপি বলছে, গত ১১ মাসে রাশিয়ায় মোট জনসংখ্যা কমেছে ৯ লাখ ৪৫ হাজার। ২০২০ সালের একই সময়সীমায় এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭৪ হাজার। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে রাশিয়ায় প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা বেড়েছে অনেকটা।
এদিকে করোনা সম্পর্কিত প্রাণহানি রুখতে কোভিড-১৯ টিকা স্পুটনিক ফাইভ গ্রহণ করতে রুশ নাগরিকদের প্রতি বার বার আহ্বান জানিয়ে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তবে দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই টিকা রাশিয়ায় ব্যাপক সহজলভ্য হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৪৫ শতাংশ রুশ নাগরিক সম্পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন।