ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৮ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে উত্তর কোরিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে কানাডা। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ব্রাজিল ও ইতালি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫২ কোটি ৫৫ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৯৬ হাজার।
শুক্রবার (২০ মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৬২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দুই শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৯৬ হাজার ৯১৭ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৮ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে উত্তর কোরিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬২ হাজার ২৮০ জন এবং মারা গেছেন ১ জন। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৯ লাখ ৭৮ হাজার ২৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে কানাডা। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪০ জন এবং নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৫৪৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৪২ হাজার ৪৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪০ হাজার ৬২৭ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ১৩০ জন এবং মারা গেছেন ২০১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৪৭ লাখ ৯৯ হাজার ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৭ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮৮২ জন এবং মারা গেছেন ১৬৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২২ লাখ ৩২ হাজার ৩৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৯০ জন মারা গেছেন। একইসময়ে তাইওয়ানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৩৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৫৯ জন।
জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৪৪৬ জন এবং মারা গেছেন ১৩৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৬০ লাখ ১৩ হাজার ২৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮৮ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৮৪২ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৯২ লাখ ৯১ হাজার ১৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭১৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ২৩৮ জন এবং মারা গেছেন ৩১ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৭ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ৯২৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮২ লাখ ৭৮ হাজার ৬১৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭২ জনের। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৩০৫ জন এবং মারা গেছেন ৪২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ১০৫ জন এবং মারা গেছেন ৪০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৩ হাজার ৮৪২ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ফিনল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৪৮৫ জন এবং মারা গেছেন ১২২ জন।
ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৩১০ জন এবং মারা গেছেন ১০৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার ১৯৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৮ জন মারা গেছেন। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৫২৭ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১৫ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১০ হাজার ৪১৫ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭ লাখ ৫২ হাজার ২২৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯১ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৫৭২ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ৩১ হাজার ১৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ৩০৩ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৯ জন এবং মারা গেছেন ৫১ জন। একই সময়ে চিলিতে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৯৩৯ জন এবং মারা গেছেন ১৩ জন। গ্রিসে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯২৮ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।