পাবনার ঈশ্বরদীতে খরিপ-২ মৌসুমের আগাম জাতের রোপা আমন ধানের (ব্রিধান-৮৭) নমুনা শস্য কর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঈশ্বরদী উপজেলার আয়োজনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
পৌর এলাকার দরিনারিচা ব্লকের ইস্তা গ্রামের প্রদর্শনী কৃষক আনিসুর রহমানের জমিতে রোপা আমনের নমুনা শস্য কর্তন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবদুল্লাহ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি পাবনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল কাদের বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আমজাদ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ইউসুফ রানা মণ্ডল, ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পিএম ইমরুল কায়েস,ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার, বাংলাদেশ আখচাষি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, কৃষক নেতা শাহাজাহান আলী পেঁপে বাদশা, স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মৎস্য কৃষক হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
স্মৃতি ধরে রাখতে আগাম জাতের রোপা আমন ধানের প্রদর্শনী ক্ষেতের পাশে একটি নারিকেল গাছের চারা রোপন করেন অতিথিরা।
প্রদর্শনী আগাম রোপা আমন ব্রিধান-৮৭ চাষী আনিসুর রহমান বলেন, আমি অনেক জাতের ধান আবাদ করেছি। এবারই আমি প্রথম, ব্রিধান-৮৭ আগাম রোপা আমন চাষ করেছি। চারা দেওয়ার পর ১২৭ দিনেই ফলন পেতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, অন্য জাতের ধানের শীষে ১৪০ টি ধান থাকে, এ জাতের ধানের শীষে ২৪০টি ধান পেয়েছি।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক প্রণোদনা, সার, বীজ, সহায়তা দিয়ে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন কৃষককে প্রণোদনা দিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। যেনো জমি কম হলেও উচ্চফলনশীল ফসল উৎপাদন করে তারা স্বাবলম্বী হয়। আমন ধানের ব্রিধান-৮৭ আবাদ করে স্বল্প সময়ে দ্বিগুণ লাভ করতে পারবেন কৃষক। এছাড়াও যে সকল কৃষি জমিতে তিনটি ফসল আবাদ হয়, সেই জমি অকৃষিখাতে ব্যবহার করা যাবে না বলে সতর্ক করে আসছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবদুল্লাহ অনুভূতি জানিয়ে বলেন, সবচেয়ে বেশি ফলন হতো বোরোতে। এখন তেমন ফলন নাই। দীর্ঘদিন পর হলেও গবেষণা করে ভালো বীজ উদ্ভাবন করেছি, তার মধ্যে ব্রিধান-৮৭ অন্যতম। রোপা আমন ব্রিধান-৮৭ অন্যজাতের ধানের চেয়ে ভালো। আগাম ১২৭ দিন আগে ফলন পাওয়া যায়।
কৃষিবিদ মো. আবদুল্লাহ আরও বলেন, এখনও অগ্রহায়ণ মাস আসেনি। ধান কাটার সময়টাই আসলে অগ্রহায়ণ মাস। চলতি মাসেই যদি কৃষক ধান কাটতে পারে। তাহলে এরপর সরিষা চাষ করে বাড়তি একটা ফসল কৃষকেরা পাবে। এতে তারা লাভবান হবেন।
মহাপরিচালক আবদুল্লাহ বলেন, শহরে প্রতিনিয়ত মানুষ বাড়ছে, ফসলি জমি কমছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সারের যে দাম নির্ধারণ করেছেন, ২০২১ সালে এসেও দাম আর বাড়েনি।