ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চলতি মৌসুমে জয়পুরহাটে শজনে ডাঁটার ফলন ভালো হয়েছে। ফলে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে শজনে ডাঁটা। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে চাষিরাও কম খরচে উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন।
চলতি মৌসুমের শুরুতে শজনে ডাঁটা ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন বাজারে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শজনেচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শজনে ডাঁটার ফলন হয়। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি দুই মাস ভরা মৌসুম থাকে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে ১০ টনেরও বেশি শজনে ডাঁটা ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, নীলফামারী, ঠাঁকুরগাওসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়।
বুধবার (১২ এপ্রিল) জেলা শহরের নতুনহাটে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শজনেচাষিরা উৎপাদিত শজনে নিয়ে এসেছেন বাজারে। শজনের আঁটি রাখতেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা দরদাম শুরু করেন। লাভের মুখ দেখলেই তাদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এগুলো নিয়ে আবার ওজন দিয়ে আঁটি বাঁধছেন। পরে পিকআপ ভ্যানে শজনে বোঝাই করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে।
শজনে ডাঁটা ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের সব অঞ্চলেই শজনে ডাঁটার কদর রয়েছে। এ বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন গড়ে ছয় টনের মতো শজনে কেনেন। বাজারে প্রতি কেজি শজনে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় কেনা হয়েছে। এগুলো তারা ঢাকা, ময়মনসিংহ, নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠান। সেখানে এগুলো ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করলে খরচ বাদে কিছু লাভ থাকে।
এ সময় শজনেচাষিরা জানান, শজনেগাছ শুকনা মাটিতে সহজে বেঁচে থাকে। এ জন্য বাড়ি বা বাগানের পাশে এবং শাকসবজির খেতের খুঁটি হিসেবেও এ গাছ লাগান তারা। গাছ বড় হয়ে গেলে কেটে দেন। যেকোনো বড় গাছের ডাল কেটে লাগানোর এক বছরের মধ্যে শজনে ডাঁটার ফলন হয়। গাছ বড় হলে ফলন বাড়ে। আগাছা কেটে দেওয়া ছাড়া শজনে বাগানে তেমন খরচ হয় না বলে জানান তারা।
শজনে ডাঁটার সঙ্গে জড়িত কর্মচারী আব্দুল আজিজ, বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন শ্রমিক মিলে বস্তার ঢোপ করি। একটি বস্তার ঢোপে ১০০ কেজি শজনে ধরে। সেই ঢোপ ভর্তি করে দিলে আমরা ৬০ টাকা করে পাই। দিনে ৫০ থেকে ৬০ ঢোপ শজনে হয়। এতে আমাদের ৩ হাজার থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়।
জেলা কৃষি বিপণন বিভাগের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক মো. সাখওয়াত হোসেন বলেন, শজনে প্রোটিন জাতীয় সবজি। এর চাহিদা বেশ ভালো রয়েছে। একটি ছোট গাছে ৫ থেকে ৭ কেজি, বড় গাছে ২০ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত শজনের ফলন হয়। বর্তমান বাজারে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত এটি পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে।
আর খুচরায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। জয়পুরহাট থেকে কিনে বিভিন্ন জেলায় শজনে বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।