সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে মুরগির দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। অন্যদিকে গাজরের দাম বেড়ে প্রতি কেজি দেড়শ টাকা ছুঁয়েছে।
শুক্রবার (২৭ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫ টাকা। আর ঈদের আগে ছিল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। অর্থাৎ ঈদের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ব্রয়লার মুরগির দাম কমছে।
ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি কমেছে সোনালী মুরগির দাম। শুক্রবার সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা।
মুরগির দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী ফয়েজ শেখ বলেন, বাজারে এখন সব জিনিসের দাম বেশি। এ কারণে অনেকে কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। যার ফল স্বরুপ বাজারে মুরগির চাহিদা কমে গেছে। এটাই মুরগির দাম কমার কারণ।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. ফারুক বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কয়েক সপ্তাহ ধরেই কমছে। এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি সোনালী মুরগির দামও কমেছে। তবে মুরগির দাম কমলেও বিক্রি আগের তুলনায় কম হচ্ছে। ঈদের পর থেকেই মুরগির চাহিদা কম।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি গাজর বিক্রি করছেন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা।
গাজরের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর বলেন, এখন গাজরের মৌসুম না। এখন যে গাজর পাওয়া যাচ্ছে তার কিছু আগে মজুত করে রাখা এবং কিছু আমদানি করা। এ কারণেই দাম বেশি।
সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম বাড়লেও বরবটি ও কাঁকরোলের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে এখন ৬০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
এছাড়া বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়াও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙে ও চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে সম্প্রতি বেড়ে যাওয়া রসুন এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের কেজিও গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। আর বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৮০ থেকে ৯৮৫ টাকা।
ঈদের আগে কেজি ৭০০ টাকা উঠে যাওয়া গরুর মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা (যারা সাধারণত শুক্রবার মাংস বিক্রি করেন) গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি।
এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা এবং ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা।