ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
রাজধানীতে বেড়েই চলেছে বায়ুদূষণ। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ঢাকায় গড় বায়ুদূষণের পরিমাণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে একদিনও ‘ভালো বায়ু’ গ্রহণ করতে পারেনি ঢাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘বিপজ্জনক মাত্রায় ঢাকার বায়ুদূষণ: জনস্বাস্থ্য ও দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি’তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক এবং স্ট্যামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। এছাড়া বাপার নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এস সিদ্দিকী, ইবনুল সাঈদ রানা, ক্যাপসের গবেষণা শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ আল নাঈম এবং যুব বাপার সদস্য সচিব রাওমান স্মিতা বক্তব্য দেন।
ঢাকার বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে ক্যাপসের পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে গড়ে বায়ুদূষণের পরিমাণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসে ২৫ দিনের গড় বায়ুমান সূচক ২১৯ দশমিক ৫২তে এসে দাঁড়িয়েছে, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। তিনি বলেন, চলতি মাসে ঢাকার মানুষের একদিনের জন্যও ভালো বায়ু সেবন করার সৌভাগ্য হয়নি। বায়ুমান বেশিরভাগ সময় ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় ছিল।
ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ২০২১ সালে ঢাকা শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ছিল তেজগাঁও এলাকা। এখানে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে বস্তুকণা ছিল ৭০ মাইক্রোগ্রাম। এর পরের অবস্থানে ছিল শাহবাগ এলাকা। এখানে প্রতি ঘনমিটারে বস্তুকণা ছিল ৬৮ মাইক্রোগ্রাম
গবেষণায় অনুযায়ী, এরপর আহসান মঞ্জিল, আবদুল্লাহপুর, মতিঝিল, ধানমন্ডি-৩২, সংসদ ভবন, আগারগাঁও, মিরপুর-১০ এবং গুলশান-২ এই এলাকাগুলোর বায়ুতে গড় বস্তুকণা প্রতি ঘনমিটারে যথাক্রমে ৫৭, ৬২, ৬০, ৬৩, ৫৯, ৬১, ৬৬ এবং ৬৫ মাইক্রোগ্রাম ছিল। প্রতিটি স্থানেই গড় বস্তুকণা নির্ধারিত মানমাত্রার (২ দশমিক ৫) কয়েকগুণ বেশি ছিল।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ঢাকা নগরের বায়ুর মান ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে হতে বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। অথচ নাগরিকদের অবগত করছে না সরকার। এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা আছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে সরকারকে ঢাকা শহরের বায়ু সম্পর্কে যথাযথ তথ্য যথাসময়ে সাধারণ মানুষকে অবগত করার দাবি জানান তিনি।