ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বেকারদের জন্য বিমা চালুসহ চার ধরনের সামাজিক বিমা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার এটি চতুর্থ বাজেট। এবার প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে জাতীয় সামাজিক বিমা কর্মসূচি চালুর লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিমা কর্মসূচি চালুর জন্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল সোশ্যাল ইনস্যুরেন্স স্কিম বিষয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। গবেষণায় চার ধরনের সামাজিক বিমা ক্রমান্বয়ে চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিমা চারটি হলো- বেকারত্ব বিমা, ম্যাটারনিটি বিমা, অসুস্থতাজনিত বীমা ও এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি বিমা। এর মধ্যে কর্মক্ষেত্রে আঘাতজনিত ক্ষতি থেকে শ্রমিকদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমের একটি পাইলট প্রকল্প চালুর লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, বিমা সেবাকে জীবনমুখী ও আপদ মোকাবিলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে শস্য বিমা, গবাদি পশু বিমা, সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য বিমা চালুর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, শস্য বিমা চালু ও এর ব্যাপক প্রসারের জন্য সরকার উৎসাহ দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিমার দাবি আদায় বিড়ম্বনা মুক্ত করার লক্ষ্যে বিমা খাতকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিমার আওতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জোরদারকরণ ও জাতীয় সঞ্চয়ে অবদান রাখার ব্যবস্থা করা হবে
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।