শনিবার (৫ মার্চ) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এ অবস্থার উন্নয়নে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘দুর্ঘটনায় ২০২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বা ১৪৭ জন। এসময় ১২টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।’
যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৪০৩ জন (৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ), বাসযাত্রী ৬৬ জন (৬ দশমিক ৫২ শতাংশ), ট্রাক- পিকআপ- কাভার্ডভ্যান- ট্রাক্টর- ট্রলি- লরি যাত্রী ৫৭ জন (৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ) মাইক্রোবাস- প্রাইভেটকার- অ্যাম্বুলেন্সযাত্রী ২৫ জন (২ দশমিক ৪৭ শতাংশ), থ্রি-হুইলারের যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১৮১ জন (১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্রা-টমটম-চান্দের গাড়ি-ডাম্পার-পাওয়ারটিলার) ৪৮ জন (৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ৩০ জন (২ দশমিক ৯৬ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, ‘ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ, প্রাণহানি ২২ দশমিক শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৯ দশমিক ০৭ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ, প্রাণহানি ২২ দশমিক ৮২ শতাংশ; খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, প্রাণহানি ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ; সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ; রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, প্রাণহানি ১০ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ২১ শতাংশ ঘটেছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ আরও বলছে, ‘দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৫৩টি (৪১ দশমিক ৬২ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ২৯৫টি (৩৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ১৪৩টি (১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৪৬টি (৫ দশমিক ৪২ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (১ দশমিক ২৯ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।’
এছাড়াও রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় গত দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ১৫ জন নিহত হয়েছেন। জানুয়ারি মাসে ৪৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৩ জন নিহত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসে ৪১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন। এই হিসাবে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ এবং প্রাণহানি কমেছে ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ।’