করোনার মধ্যেও বেড়েছে সাক্ষরতার হার। গত বছরের চেয়ে এ বছর রেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও দেশে এখনও মোট জনসমষ্টির ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ নিরক্ষতায় নিমজ্জিত।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার সুযোগবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দেওয়া, জীবনব্যাপী শিক্ষা সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকায়ন, দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ প্রণয়ন করেছে।
এ আইন অনুযায়ী উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা ৮-১৪ বছর বয়সের শিশু, যারা কখনোই স্কুলে যায়নি বা প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগে ঝরে পড়েছে এবং বয়স ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের নারী-পুরুষ যারা স্কুলে যাননি, তাদের এ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় সাক্ষরজ্ঞান দেওয়া হয়ে থাকে।
জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে ১ কোটি ৮০ লক্ষ নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতা প্রদান করা হয়েছে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন করা হবে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জানান, এ কার্যক্রমের আওতায় ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন কিশোর-কিশোরী ও বয়স্ক নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সাক্ষরতা প্রদান করা হবে। মৌলিক সাক্ষরতা অর্জনকারীদের কার্যকর দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাবোর্ডে কার্যকর করা আমাদের চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, সকল শিশুদের জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় ৮-১৪ বছর বয়সে বিদ্যালয়-বহির্ভূত ১০ লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জাকির হোসেন জানান, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক শিক্ষাসহ দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে জীবনব্যাপী শিক্ষা কর্মসূচির কাজ চলমান রয়েছে।
এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের ৮-১৪ বছর বয়সী বিদ্যালয়-বহির্ভূত ঝরে পড়া শিশুদের এবং ১৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষদের মৌলিক সাক্ষরতা ও দক্ষতার প্রশিক্ষণ প্রদানসহ আয়বর্ধক কাজে অংশগ্রহণ বা কর্মসংস্থানের সুযোগে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব মো. হাসিবুল আলম ও অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পন্ডিত প্রমুখ।