দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। তারপরও প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রাণহানীও ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে আরও ১ জন এবং শুক্রবার ৭ জন সহ দুদিনে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে জটিল রোগীদের জন্য আইসিইউ প্রয়োজন হলেও সরকারী-বেসরকারি সব হাসপাতালের আইসিইউ সংকট চলছে। একটি আইসিইউ বেডের জন্য চলছে হাহাকার। রোগী নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনরা।
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আইসিইউতে ঠাঁই হচ্ছে না অনেক রোগীর। সিলেটের সরকারী-বেসরকারি মিলে করোনা রোগীদের জন্য ৬৭টি আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে প্রায় ৪৫টি বেড। করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতাল সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রয়েছে ১৬টি বেড। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৬টি বেড। গত তিন দিন ধরে সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালের আইসিইউতে বেড খালি নেই।
১০০ শয্যার সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আর জায়গা খালি নেই। হাসপাতালের আর, এমও ডা.সুশান্ত মহাপত্র শনিবার ( ৩ জুলাই) বিকালে ইত্তেফাককে জানান, এই হাসপাতালের ১৬টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ১৫ টিতে রোগী ভর্তি। সাধারণ বেডে রয়েছেন ৯৩ জন। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন।
সূত্র জানায়, অন্যদিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও অনেক করোনা রোগী রয়েছেন। সেখানে চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। হাসপাতালের নতুন ভবনে আরো ২০০ শয্যার একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হচ্ছে বলে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মোজয় দত্ত জানিয়েছেন। তিনি জানান আইসিইউ সংকট চলছে। সরকারী ও বেসরকারি সব হাসপাতালের আইসিইউ রোগীতে ভর্তি।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানান, গেল ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের চারটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ২০৩ জন করোনায় আক্রান্ত হন। সিলেট জেলার ১১০ জন, সুনামগঞ্জে ২৩ জন, হবিগঞ্জে ৩৫ জন, মৌলভীবাজারে ২৩ জন ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১২ জনের করোনা সনাক্ত হয়। নতুন এই ২০৩ জনসহ সিলেট বিভাগে রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৪৮৬ জন। এই সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন ২২ জন। তারা সিলেট জেলার বাসিন্দা। সব মিলিয়ে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৯৭ জন। তবে উপসর্গ নিয়ে ঘরে ঘরে অনেকেই অসুস্থ রয়েছেন।