ঢাকা, ৩০ জুন রোববারঃ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), আজ বিকেলে ৪ টায় কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গ্রাহক বাদে বাকি সব ধরনের বাণিজ্যিক গ্রাহক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত গ্রাহক পর্যায়ের গ্যাসের দাম বাড়াবার ঘোষণা দিয়েছে। আগামীকাল ১ জুলাই সোমবার থেকে বর্ধিত মূল্য কার্যকর হবে বলে বিইআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঘোষণার পাশাপশি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে। সচিব রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, গৃহস্থালি গ্রাহকদের এক বার্নার চুলায় ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য নতুন করে নির্ধারিত হয়েছে ৯২৫ টাকা। আর দুই বার্নারের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হয়েছে ৯৭৫ টাকা। বর্তমানে এক ও দুই বার্নারের জন্য গ্যাসের নির্ধারিত মূল্য ছিল যথাক্রমে ৭৫০ ও ৮০০ টাকা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিএআরসি আইন ২০০৩-এর ধারা ২২ (খ) ও ৩৪ অনুযায়ী তিতাস, বাখরাবাদ, জালালাবাদ, কর্ণফুলী, সুন্দরবন ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির ভোক্তা পর্যায়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যহার বাড়ানো হলো। বাণিজ্যিক গ্রাহকশ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গ্রাহকদের মূল্যহার অপরিবর্তিত থাকবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান ন্যূনতম চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া গৃহস্থালি ছাড়া অন্য গ্রাহকশ্রেণির ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার মাসিক অনুমোদিত লোডের বিপরীতে ১০ পয়সা হারে ডিমান্ড চার্জ আরোপ করা হয়েছে।
গৃহস্থালি পর্যায়ে যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করছেন তাদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৬০ পয়সা করা হয়েছে। সিএনজি গ্যাসের দামও বৃদ্ধি করা হয়েছে, ৩৮ টাকা থেকে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে সিএনজির দাম।
উল্লেখ্য যে, এ বছর গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেই গণশুনানির সিদ্ধান্তই জানানো হলো।এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গ্যাসের দাম সমন্বয়ের জন্য প্রস্তাব করেছিল পেট্রোবাংলা ও গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানিগুলো। এসব সংস্থা গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার পর গ্যাসের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানিয়েছিলেন। বিইআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গণশুনানি ও যৌক্তিকতা বিবেচনায় গ্যাসের দামের বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই মাসে দুই দফায় এই নতুন মূল্য কার্যকর করার কথা ছিল।মার্চ মাসের নতুন মূল্য কার্যকর হলেও হাইকোর্টের আদেশে জুলাই মাসের মূল্যবৃদ্ধি স্থগিত হয়ে যায়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যক খাতেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে শিল্পোৎপাদনে খরচ বাড়বে, ব্যবসায়ীরাও বর্ধিত মূল্যের অর্থ আদায় করবেন দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে। দিনশেষে বর্ধিত গ্যাসের মূল্য সাধারণ ভোক্তাদের পকেট থেকেই সরকার আদায় করবে।