সময় মত ডেলিভারি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও পন্য হাতে পাচ্ছে না গ্রাহক। রাজধানীসহ দেশের প্রায় বেশকিছু জায়গায় ভোক্তাসুবিধার্থে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বেশকিছু সময়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে গ্রাহক। পন্য ডেলিভারি মার্কেটপ্লেস পেপারফ্লাই ও মেট্রো এক্সপ্রেস এবং এফ-কর্মাস সাইট প্রিমিয়াম বিডি স্ট্রিমিং এর বিরুদ্ধে ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের নিকট অভিযোগ করেছে তিনজন ভুক্তভোগী।
অনলাইনে পণ্য অর্ডার করে প্রতারণার শিকার হয়েছে অনেকেই। কিন্তু প্রতারণার পাশাপাশি পণ্য ডেলিভারিতেও সমান সংখ্যক হয়রানির শিকার হচ্ছে ভোক্তা। বেশির ভাগ ভুক্তভোগী জানায়, পণ্যঅর্ডার করে বহুদিন অপেক্ষা করেও হাতে পাচ্ছে নাহ।
“পেপারফ্লাই প্রাইভেট লিমিটেড” হচ্ছে অ্যাপস ও ওয়েব ভিত্তিক একটি পন্য ডেলিভারি মার্কেটপ্লেস সাইট। সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডোরস্টেপ ডেলিভারি সার্ভিস নিয়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি আকাশ হোসেন নামক একজন ভুক্তভোগী জানান, হোম ডেলিভারি কাভারেজের মধ্যে থেকে তিনি এই সুবিধাটি পাচ্ছে নাহ। এই ব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের থেকে কোনো প্রকার সাড়া আসে নি বরং এক পর্যায়ে তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলে জানান ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী আরো জানান, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ২৪ ঘন্টার ভেতরে পণ্য ডেলিভারি দেয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলেও তিনি তেমন সুবিধা পায় নি বরং ব্যাপক থেকে হয়রানির শিকার হয়েছে।
“মেট্রো এক্সপ্রেস” হচ্ছে ওয়েবসাইট ভিত্তিক একটি পণ্য ডেলিভারি মার্কেটপ্লেস। তারা ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে কম টাকায় দ্রুত সময়ে পন্য ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী স্থানে ডেলিভারি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকলেও সম্প্রতি উম্মে হানি ওমি নামক একজন ভুক্তভোগী তাদের থেকে হয়রানির শিকার হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগকারী উম্মে হানি ওমি তার অভিযোগে জানান, তিনি তাদের সাথে বেশকিছু দিন যাবত অনলাইন পার্সেল সার্ভিসে কাজ করেছেন। প্রথমদিকে সময়মত পারিশ্রমিক পেলেও পরে আর হদীস মেলেনি। এই বিষয়ে তিনি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের অফিসে এবং হেল্প সেন্টারে বেশ কয়েক দফা যোগাযোগ করেন। কিন্তু অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে তেমন সাড়া পান নি। অবশেষে উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন ভোক্তাকন্ঠের নিকট। ভুক্তভোগী আরো জানান, বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
তৃতীয় অভিযোগকারী অনামিকা আক্তার নিম্মী, একটি এফ-কর্মাস সাইট “প্রিমিয়াম বিডি স্ট্রিমিং” থেকে স্ট্রিমিং সার্ভিসের স্ক্রিন ক্রয় করেন। নিম্মী তার অভিযোগে জানান, ক্রয়কৃত স্ক্রিনটি তার ডিভাইসের জন্য উপযুক্ত ছিলো নাহ। তিনি এর সমাধান জানতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করলে তারা যেরূপ উপায় দেখিয়েছে সেভাবেও সমাধান না হলে পরবর্তীতে উপায় না দেখে টাকা রিফান্ড করার ব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের থেকে কোনো প্রকার সাড়া আসে নি বলে জানান ভুক্তভোগী।
অভিযোগকারী আরো জানান, শুধুমাত্র টাকা রিফান্ড নয় তাদের থেকে কোনো প্রকারের সার্ভিসও তিনি পান নি। এবং ভোক্তা হিসেবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানান।
উল্লেখিত তিনজন ভুক্তভোগীর অভিযোগটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৬৬ ধারা অনুযায়ী একজন ভোক্তা চাইলে অধিকার আদায়ে দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে পারে।
তবে অনলাইনে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো বিশ্বাসযোগ্য সাইট বা পেজ থেকে অর্ডার করা উচিত এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ না করে ক্যাশ অন ডেলিভারি নিয়মটি মেনে চললে সেই সাথে পণ্যের ব্যাপক পজেটিভ রিভিও দেখে পণ্য ক্রয় করলে প্রতারণার ঝুঁকি অনেকটায় কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমাদের সকলের উচিত এইসব বিষয়ে একটু সচেতন হওয়া এবং অন্যকেও সচেতন করা। আপনার আশেপাশের কেউ কিংবা আপনি নিজে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কেন্দ্রে অভিযোগ করতে পারেন। তবে জেনে রাখা জরুরি, প্রতিকারের উদ্দেশ্যে অভিযোগ করলে অবশ্যই তার প্রমাণ থাকতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সংবাদ দেখুন
আরো সংবাদ দেখুন: বাজারে নামলো ভোক্তা অধিকার, নীত্যপণ্য, ইভ্যালির