ঢাকা, ৮ জুলাই সোমবারঃ ভেজাল কি সে সম্পর্কে আমাদের সামান্য হলেও ধারণা আছে, তবে সেটা খুব গভীর নয়। একইসাথে নিরাপদ খাদ্য আইনের বিশ্লেষণও বর্তমান সময়ে বেশ গুরুত্বের সাথে আলোচনার দাবী রাখে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে ভোক্তাকণ্ঠে লিখেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সদস্য জনাব মোঃ আবুল হোসেন মিঞা।
ফলের মৌসুম ও রমজান মাস আসলে ভেজাল শব্দটি মানুষের মুখে কোটি কোটিবার উচ্চারিত হয়। ভেজাল জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি এবং বর্তমানে ইহা জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
মূলতঃ ভেজাল পণ্য ও পানীয় প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ গবেষণাগারে পরীক্ষা ছাড়া ভেজাল নির্ণয় করা যায় না। এই জন্য দরকার নির্ভরশীল Man & Machine। ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী অভিযোগকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সরকার অনুমোদিত গবেষণাগারে ভেজাল পরীক্ষা করতে পারে এবং অভিযোগকারী নিজেও ভেজাল পরীক্ষা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
ভেজাল সম্পর্কে ভোক্তাদের সাধারণ ধারণা থাকা দরকার। সে লক্ষ্যে খাদ্যে ভেজালের সংজ্ঞা উল্লেখ করা হল:
ভোক্তা অধিকার আইন, ২০০৯ ভেজালের সংজ্ঞা বরাত (Reference) হিসেবে ২(১৮) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। যা নিম্নরূপ:
‘ভেজাল’ অর্থ নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৪৩ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (২৯) এ সংজ্ঞায়িত ভেজাল এবং Special Powers Act, 1974 (Act No. XIV of 1974) এর section 25C বা অন্য কোন আইনে উল্লিখিত adulteration বা ভেজাল;
নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ভেজাল খাদ্য হল :
“ভেজাল খাদ্য” অর্থ এমন কোন খাদ্য বা খাদ্যদ্রব্যের অংশ,
(ক) যাহাকে রঞ্জিত, স্বাদ-গন্ধযুক্ত, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ বা আকর্ষণীয় করিবার জন্য এইরূপ পরিমাণ উপাদান দ্বারা মিশ্রিত করা হইয়াছে, যে পরিমাণ উপাদান মিশ্রিত করা মানব-স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং যাহা কোন আইনের অধীন নিষিদ্ধ; বা
(খ) যাহাকে রঞ্জিতকরণ, আবরণ প্রদান বা আকার পরিবর্তন করিবার জন্য এমন কোন উপাদান মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মিশ্রিত করা হইয়াছে যাহার ফলে মূল খাদ্যদ্রব্যের ক্ষতি সাধিত হইয়াছে এবং যাহার ফলে উহার গুণাগুণ বা পুষ্টিমান হ্রাস পাইয়াছে; বা
(গ) যাহার মধ্য হইতে কোন স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণপূর্বক অপেক্ষাকৃত স্বল্প মূল্যের ভিন্ন কোন উপাদান মিশ্রিত করিবার মাধ্যমে আপাতঃ ওজন বা পরিমাণ বৃদ্ধি বা আকর্ষণীয় করিয়া খাদ্য ক্রেতার আর্থিক বা স্বাস্থগত ক্ষতি সাধন করা হয়;
Special Powers Act, 1974 (Act No. XIV of 1974)এর section 25C বা অন্য কোন আইনে উল্লিখিত adulteration বা ভেজাল;
25C. (1) Whoever-
(a) adulterates any article of food or drink, so as to make such article noxious as food or drink, intending to sell such article as food or drink, or knowing it to be likely that the same will be sold as food or drink; or
(b) sells, or offers or exposes for sale, as food or drink, any article which has been rendered or has become noxious, or is in a state unfit for food or drink, knowing or having reason to believe that the same is noxious as food or drink; or
(c) adulterates any drug or medical preparation in such a manner as to lessen the efficacy or change the operation of such drug or medical preparation, or to make it noxious, intending that it shall be sold or used for, or knowing it to be likely that it will be sold or used for, any medical purpose, as if it had not undergone such adulteration; or
(d) knowing any drug or medical preparation to have been adulterated is such a manner as to lessen its efficacy, to change its operation, or to render it noxious, sells the same, or offers or exposes it for sale, or issues it from any dispensary for medical purposes as unadulterated, or causes it to be used for medical purposes by any person not knowing of the adulteration; or
(e) knowingly sells, or offers or exposes for sale, or issues from a dispensary for medical purposes, any drug or medical preparation, as a different drug or medical preparation,
(2) Whoever-
(a) adulterates any hair oil, toilet soap or other cosmetic in such a manner as to make it harmful to
hair, skin,
complexion or any part of the body, intending that it shall be sold or used for, or knowing it to
be likely that it will be sold or used for, any cosmetic purpose; or
(b) knowing any hair oil, toilet soap or other cosmetic to have been adulterated in such a manner as to make it harmful to hair, skin, complexion or any part of the body, sells the same, or offers or exposes it for sale, as adulterated,
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ভেজাল হচ্ছেঃ
· A substance is added which depreciates or injuriously affects it.
· Cheaper or inferior substances are substituted wholly or in part.
· Any valuable or necessary constituent has been wholly or in part abstracted.
· It is an imitation.
· It is colored or otherwise treated, to improve its appearance or if it contains any added substance injurious to health.
· For whatever reasons its quality is below the Standard.
উল্লেখ্য যে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে প্রতিকার পেতে নিম্নোক্ত ধারাসমূহে দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ধারাসমূহ হচ্ছেঃ
৪১। ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়ের দণ্ডঃ কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করিলে বা করিতে প্রস্তাব করিলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৪২। খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণের দণ্ডঃ মানুষের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কোন দ্রব্য, কোন খাদ্য পণ্যের সহিত যাহার মিশ্রণ কোন আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হইয়াছে, কোন ব্যক্তি উক্তরূপ দ্রব্য কোন খাদ্য পণ্যের সহিত মিশ্রিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৪৩। অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণের দণ্ডঃ কোন ব্যক্তি মানুষের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন কোন প্রক্রিয়ায়, যাহা কোন আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হইয়াছে, কোন পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করিলে তিনি অনূর্ধ্ব দুই বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।