দেশের অভ্যন্তরে চায়ের চাহিদা বাড়ায় উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও চা রপ্তানিতে ভাটা পড়ছিল। মহামারি করোনার আগের বছর চা রপ্তানি কমে ছয় লাখ কেজিতে নেমে আসে। তবে করোনাকালে উৎপাদন সচল রাখা ও সমন্বিত পরিকল্পনার ফলে ২০২০ সালে রপ্তানি আগের বছরের চেয়ে এক লাফে ১৫ লাখ কেজি বাড়ে। তাতে গত বছর ১৯টি দেশে মোট ২১ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা রপ্তানি করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৫ সালে এক কোটি কেজি চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। সে লক্ষ্যে চা বাগান মালিক, চাষি ও রপ্তানিকারকদের সমন্বয়ে নেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা। চলতি অর্থবছর ৪০ কোটি টাকার চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে রপ্তানিও আশাব্যঞ্জক।
চা উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ এলাকা মৌলভীবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জই শুধু নয়, এখন দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলায়ও চা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬৭টি নিবন্ধিত চা বাগান ও টি এস্টেট রয়েছে বলে চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়। সারাদেশে সুবিধাজনক মাটিতে চায়ের চাষ করার পরিকল্পনা নেওয়ার পাশাপাশি ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ কোটি কেজি। এছাড়া রপ্তানির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১ কোটি কেজি।
এ বিষয়ে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, করোনার সময়ে চা উৎপাদন বাড়াতে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের সমন্বিত উদ্যোগে করোনাকালেও কোনো চা ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকেনি। অনুকূল আবহাওয়া আর চা মালিকদের সহযোগিতায় এবারও চায়ের উৎপাদন বেড়েছে। তিন-চার বছর ধরে চা উন্নয়নের পথনকশা হিসেবে ভূমিকা রাখায় দেশে উৎপাদিত চায়েয় রপ্তানি ও উৎপাদন উভয়ই বেড়েছে। এখানে সবার সহযোগিতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রথম পরিকল্পনা হলো ডমেস্টিক মার্কেটে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। আমরা এখন কোয়ালিটির দিকে নজর দিয়েছি। কোয়ালিটি ভালো হলে রপ্তানি বাড়বেই। আমাদের টার্গেট আছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ মিলিয়ন (এক কোটি কেজি) চা রপ্তানি করার।
গত দুই দশকের মধ্যে চা রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি আয় হয় ২০০৮ সালে। ওই বছর ৮৪ লাখ কেজি চা রপ্তানি করে ৯৭ কোটি টাকা আয় করেন রপ্তানিকারকরা।