ভেক্তাকণ্ঠ ডেস্ক
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আজ ১৩ অক্টোবর ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণী রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্খার বাস্তবরূপ দিতে দুর্যোগ-ঝুঁকি হ্রাস এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত দেশ গড়তে সকলকে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম ও জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে- এ প্রত্যাশা করি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২১’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘দুর্যোগ-ঝুঁকি হ্রাসে, কাজ করি একসাথে’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। একইসাথে বঙ্গবন্ধুর লালিত ও প্রধানমন্ত্রীর আনুকূল্যপুষ্ট ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’র গৌরবময় ৫০ বছরপূর্তি অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব আজ বিশ্বব্যাপী পরিলক্ষিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেও বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে পৌনঃপুনিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ- যেমন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, পাহাড়ি ঢল, টর্নেডো, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে থাকে। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লাখেরও অধিক মানুষের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠা পায়। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সিপিপি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ কর্মসূচি উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি খাতভিত্তিক প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে জনগণের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা প্রদানে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আশ্রয় কেন্দ্র পরিচালনা, ত্রাণ বিতরণ ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সঠিক ব্যক্তিকে নগদ সহায়তা পৌঁছানো ইত্যাদি কর্মসূচি দুর্যোগকালীন দুর্ভোগ কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো টেকসইকরণের মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ ও উদ্ধার কাজ নির্বিঘ্ন করার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
জনবান্ধব এ সকল কর্মসূচি স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার সাথে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলে সচেষ্ট থাকবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২১’ ও সিপিপি-এর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
খবর: বাসস