ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের নলকা সেতুর কিছু অংশ ভেঙে যাওয়া ও সেখানে মাত্র একপাশ দিয়ে যান চলাচল করায় সিরাজগঞ্জের সব সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে জেলার ৫০ কিলোমিটারও বেশি মহাসড়কজুড়ে যানজট রয়েছে। যাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখ লাখ যাত্রী ও অন্তত ২০ হাজারের বেশি ছোট বড় যানবাহন।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যানজট একদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে নলকা সেতু হয়ে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের চান্দাইকোনা পেড়িয়ে বগুড়ার দিকে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কাছিকাটা ১০ নম্বর সেতু পার হয়ে নাটোরের দিকে ও ঢাকা-পাবনা মহাসড়কেও এই যানজট ছড়িয়ে গেছে। এতে কম করে ৫০ কিলোমিটার মহাসড়কে যানজট রয়েছে।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নিশ্চিত করেছেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে গোলচত্বর এলাকার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, যানজট একদিকে টাঙ্গাইল ও অন্যদিকে নাটোর-বগুড়া জেলার মধ্যে পৌঁছে গেছে। তবে আমরা যানজট নিরসনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এদিকে গতকাল রাত ২টা থেকে এখনো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার যানবাহন। যার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো যাত্রী। ভোগান্তি পৌঁছে গেছে চরমে।
পেশাগত কাজে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে গতকাল রাত ২টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের মুলিবাড়ি এলাকায় আটকে পড়েছেন প্রকৌশলী মোস্তাকিম। তিনি জানান, ‘রাত ২টার দিকে এখানে বাস দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত একটুও আগাতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের মহাসড়কেও এমন যানজট ও দুর্ভোগ কখনো দেখিনি। যাত্রীরা সবাই ভোগান্তিতে আছেন।’ এছাড়াও দীর্ঘ সময় মহাসড়কে আটকা পড়ে যাত্রীদের খুদা নিবারণে একমাত্র ভরসা এখন মহাসড়কের অস্থায়ী ফেরিওয়ালারা। কিন্তু এই যানজটের ভোগান্তি থেকে আপাতত রক্ষা পাওয়ারও কোনও আশা দেখছেন না তারা।
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, নলকা সেতু ভেঙে যাওয়ায় সেতুর একপাশ দিয়ে যান চলাচল করাতে হচ্ছে। এতে একদিকের গাড়ি বন্ধ রেখে আরেক দিকের গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এছাড়াও সেতুর আশেপাশের মহাসড়ক ভেঙে ভেঙে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে গাড়ি চাইলেও জোরে চলতে পারে না। মূলত এই কারণেই যানজট।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) নলকা সেতুটি ভেঙে গেলে সে দিন রাত থেকে যানজট শুরু হলেও গতকাল রাতে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের মোট ৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার পরিবহন ও লাখো যাত্রীরা।