করোনাভাইরাস মহামারিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া সীমান্ত বাংলাদেশ-সহ ছয় দেশের নাগরিকদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গাপুর। একই সঙ্গে অন্যান্য কয়েকটি দেশের জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার কড়াকড়ি ও অন্যান্য বিধি-নিষেধও শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এশিয়ার এই নগর রাষ্ট্র।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসব দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর তাদের নাগরিকদের জন্য সিঙ্গাপুর ভ্রমণের বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৬ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯মিনিট থেকে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার পর্যটকরা সিঙ্গাপুরে প্রবেশ অথবা ট্রানজিট নিতে পারবেন। তবে এ জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার আগের ১৪ দিনের ভ্রমণের ইতিহাস সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
এই ভ্রমণকারীরা সিঙ্গাপুরের চতুর্থ শ্রেণির সীমান্ত বিধি-নিষেধের আওতায় পড়বেন। এসব বিধি-নিষেধের মধ্যে দেশটিতে পৌঁছানোর পর সরকারি স্থাপনায় ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালনের নির্দেশ রয়েছে।
মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, মিসর, হাঙ্গেরি, ইন্দোনেশিয়া, ইসরায়েল, মঙ্গোলিয়া, কাতার, রুয়ান্ডা, সামোয়া, সিচেলস, দক্ষিণ আফ্রিকা, টোঙ্গা, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং ভিয়েতনামকে তৃতীয় শ্রেণির সীমান্ত বিধি-নিষেধের আওতায় রাখা হয়েছে। ২৬ অক্টোবর থেকে এসব দেশের পর্যটকরা তাদের নিজেদের আবাসস্থলে অথবা বাসায় ১০ দিনো কোয়ারেন্টাইন পালন করতে পারবেন।
এছাড়া একই দিন থেকে বেশিরভাগ পর্যটককেই সামান্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ক্যাটাগরি ২ (টিকা না নেওয়া ট্রাভেল লেন গন্তব্য), তিন এবং চারের অন্তর্ভূক্ত দেশের সব যাত্রীকে সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর করোনার পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে না। এর পরিবর্তে কোয়ারেন্টাইন শেষে শুধুমাত্র পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে তাদের।
ক্যাটাগরি ৩ এবং চারের অন্তর্ভূক্ত দেশের যাত্রীদের সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর কোয়ারেন্টাইন পালনের তিন এবং সপ্তম দিনের মাথায় তাদের যে অ্যান্টিজেন র্যাপিড টেস্ট করানোর নিয়ম ছিল; এখন আর সেটিও করতে হবে না।
এর আগে, দেশটির কর্তৃপক্ষ আগামী ১ নভেম্বর থেকে সিঙ্গাপুরে প্রয়োজনীয় শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের ‘নিরাপদ এবং ক্রমাঙ্কিত পদ্ধতিতে’ প্রবেশের অনুমতি দেবে বলে ঘোষণা দেয়। তবে এ জন্য দেশটিতে প্রবেশের আগে টিকার পূর্ণ ডোজ নেওয়া থাকতে হবে তাদের।
কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কুং বলেছেন, সবচেয়ে প্রচলিত প্রশ্নগুলোর একটি হল অভ্যন্তরীণ বিধি-নিষেধ শিথিল না করে সিঙ্গাপুর কেন তার সীমানা পুনরায় খুলছে। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দেশে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে; সেজন্য সীমান্তে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে।
‘কয়েক মাস ধরে সংক্রমণের উচ্চ ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর অনেক দেশে মহামারি পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে এবং তার মধ্যে কিছু দেশের সংক্রমণের হার সিঙ্গাপুরের চেয়েও কম। যে কারণে আমরা এসব দেশের সঙ্গে নিরাপদেই ভ্রমণ চালু করতে পারি।’