ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ভর্তুকি সামাল দিতে আরেক দফা প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়াতে পারে সরকার। তবে এ বিষয়ে এখনই কেউ মুখ খুলছে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখানে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
জানা গেছে, এখন দেশে দিনে এক হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। বাকি ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি এলএনজি আমদানি করেই পূরণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিশ্বে জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দরের কারণে আমদানিনির্ভর দেশগুলো বেশি দামে গ্যাস ও তেল কিনছে বলেও সরকারের লোকসান বেড়ে চলেছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এলএনজির জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগছে। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এই ভর্তুকির প্রয়োজন হলে শেষ ছয় মাসে আরো লাগবে। যদিও তার পরিমাণ নির্দিষ্ট হয়নি। এখন খোলাবাজার থেকে প্রতি এমএস বিটিইউ এলএনজি ৩২ থেকে ৩৬ ডলারের নিচে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। বাড়তি দামে তিনটি এলএনজির কার্গো কেনা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সরকারের দুই হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর বাইরে জ্বালানি তেলেও বিপুল লোকসান গুনতে হচ্ছে সরকারকে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়াতে জ্বালানি বিভাগের সম্মতিতে এরই মধ্যে অভ্যন্তরীণ কাজ শুরু করেছে পেট্রোবাংলার অপারেশন শাখা। এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সরকারপ্রধানের অনুমোদন পেলেই বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) সেই প্রস্তাব পাঠাবে পেট্রোবাংলা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ জুন প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৩২ শতাংশের মতো বাড়িয়েছিল বিইআরসি, যা ওই বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকার পরিবর্তে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাসিক খাতে মিটারে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটারে ১২ টাকা ৬০ পয়সা করা হয়। সিএনজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা এবং বিদ্যুৎ ও সার কারখানার জন্য চার টাকা ৪৫ পয়সা। বাণিজ্যিক খাতে প্রতি ঘনমিটার ২৩ টাকা, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্যাপটিভ খাতে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা, শিল্প ও চা বাগানে ১০ টাকা ৭০ পয়সা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭ টাকা ৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।