ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক :
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্বপালন করলেও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৭৬ জন নার্স প্রণোদনার কোনও টাকা পাননি। অন্যদিকে হাসপাতালের ইন্টার্নসহ ৪৭২ জন চিকিৎসকের প্রায় সবাই করোনার প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম।
এদিকে প্রণোদনার টাকা না পাওয়ার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালকের উদাসীনতা এবং দায়িত্বহীন আচরণকে দায়ী করেছেন হাসপাতালের নার্সেস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি গোফরান আহাম্মেদ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ৭৬ জন নার্স ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে চার জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
নার্সরা অভিযোগ করেন, তারা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে করোনায় আক্রান্ত এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। সরকার অনেক আগেই হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের করোনাকালে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছিল।
নার্সেস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি গোফরান আহাম্মেদ অভিযোগ করেন, সরকার করোনাকালে স্বাস্থ্য সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের প্রণোদনার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব হাসপাতালে করোনাকালে সেবাদানকারী নার্স ও কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করে অধিদফতরে পাঠানোর আদেশ দেয়। তবে হাসপাতালের পরিচালক নানা অজুহাতে তালিকা চূড়ান্ত করার নামে সময় ক্ষেপণ করছেন। এতে আমরা প্রণোদনার অর্থ পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রণোদনার অর্থ না পেলে কঠোর আন্দোলনে যাবো।
এদিকে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালে ৭৬ জন নার্স ও কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন। এর মধ্যে চার জন মারা গেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যে চার জন মারা গেছেন আর যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের কেউ ক্ষতিপূরণ বা প্রণোদনার কোনও টাকা পায়নি। এটা চরম অমানবিক বিষয়, এ বিষয়ে বার বার পরিচালককে বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা যাচাই-বাছাই শেষ হওয়ার পথে। শিগগিরই তালিকা অধিদফতরে পাঠানোর পর নির্দেশনা পেলে অর্থ প্রদান করা হবে।