মেট্রোরেলের আরও একটি চালান মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় চারটি বগি ও দুটি ইঞ্জিন নিয়ে বন্দর জেটির ৯ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করে পানামা পতাকাবহী ‘ব্রাইটলি কোরাল’ জাহাজ।
গত ২৫ অক্টোবর জাপানের কোবে বন্দর থেকে ছেড়ে আসা এই জাহাজে মেট্রোরেলের বগি ছাড়াও ৮০ প্যাকেজের ৪২৩ মেট্রিক টনের সরঞ্জামও এসেছে। শনিবার সকাল থেকে জেটিতে এসব পণ্য খালাস শুরু হয়ে দুপুরের মধ্যেই তা শেষ হয়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন এ তথ্য জানান।
বিদেশি জাহাজ ‘এম ভি ব্রাইটলি কোরালে’র স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানির ব্যাবস্থাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ পর্যন্ত মোট ছয়টি জাহাজে করে মেট্রোরেলের মোট ৪৮ টি বগি মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। আগামী মাসে মেট্রোরেলের আরও একটি চালান আসার কথা রয়েছে। সব মিলে ২০২২ সালের মধ্যে মেট্রোরেলের আরও ৯৮ টি বগি ও ইঞ্জিন আসবে বলেও জানান তিনি।
বন্দর সূত্র জানায়, ১২ নভেম্বর ৪টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিন নিয়ে এম,ভি ব্রাইট কোরাল বন্দর জেটিতে ভিড়েছে। এর আগে গত ২ অক্টোবর ৪টি ইঞ্জিন ও ৮টি কোচ নিয়ে এম,ভি এসপিএম ব্যাংকক, ১২ সেপ্টেম্বর ৪টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিন নিয়ে এম,ভি প্রেসার্স কোরাল, ২০ জুলাই এম,ভি হরিজন-০৯ জাহাজে ১০টি কোচ ও ২টি ইঞ্জিন, ৫ মে এম,ভি ওশান গ্রেস জাহাজে ৬টি কোচ এবং ৩১ মার্চ এম,ভি এসপিএম ব্যাংকক জাহাজে মেট্টোরেলের ৬ টি কোচ আসে এ বন্দরে। যা খালাস শেষে নদী পথে নেয়া হয় ঢাকার উত্তরায় দিয়াবাড়ী ডিপোতে। আমদানি করা এসব বগি সংযোজন হয়ে ইতোমধ্যে বাস্তবে রুপ নিয়েছে। গত ২৯ আগষ্ট উত্তরা থেকে পল্লবী পর্যন্ত স্বপ্নের মেট্রোরেলের বাস্তবে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘দেশে আমদানি হওয়া মেট্রোরেলের এসব বগি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ার ক্ষেত্রে বন্দরের সক্ষমতার প্রমাণ মিলেছে’।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এর আগে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন মালামাল ও যন্ত্রাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে আসে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বন্দরের আউটাবার ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ইনার বারের ড্রেজিং চলছে। নাব্য সংকট দূর হওয়ায় এখন বড় বড় জাহাজ এই বন্দরে ভিড়তে পারছে। সবমিলিয়ে মোংলা বন্দর একটি গতিশীল বন্দর হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে এবং বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেট্রোরেলের প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানায়, রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেল-৬ নির্মিত হচ্ছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে।
উল্লেখ্য, মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি। প্রতি সেট ট্রেনের দু’পাশে দুটি ইঞ্জিন থাকবে। এর মধ্যে থাকবে চারটি করে কোচ। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোতে থাকবে লম্বালম্বি আসন। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দু’পাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংবলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন।