ভোক্তাকণ্ঠ প্রতিনিধি: কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দর। বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকিটার মধ্যে সরকার ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা যোগান দেবে।
প্রথম ধাপে বন্দর ও পণ্য পরিবহনের জন্য সড়ক নির্মাণসহ খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা,কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৬ সাল। দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত করা হবে আরো তিনটি কনটেইনার টার্মিনাল। এভাবে পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে টার্মিনাল। মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনায় প্রথম ধাপে রয়েছে দুটি টার্মিনাল। এই দুই টার্মিনালে সাধারণ পণ্যবাহী ও কনটেইনার টার্মিনালে বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) ভিড়তে পারবে, যেটি এখন বাংলাদেশের কোনো বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারে না। এর ডিজাইন ও লে-আউটসহ সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে করা হচ্ছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “দেশে যে কয়টি সমুদ্র বন্দর রয়েছে, তার কোনোটিই গভীর সমুদ্র বন্দর নয়। ফলে ডিপ ড্রাফটের ভেসেল- এসব বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে না। ডিপ ড্রাফট ভেসেলের জেটি সুবিধা নিশ্চিত করতেই মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে।”
মাতারবাড়ি প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে অনেক জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা অনেক সহজ হবে। এসব টার্মিনালে ১৬ মিটার ড্রাফটের ৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এবং ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের বেশি জাহাজ ভিড়তে পারে না। বন্দরের জেটিতে আসতে পারে না মাদার ভেসেলগুলো । ফলে ফিডার জাহাজে করে কনটেইনার আনানেয়া করতে হয়। মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের ১৬ মিটার গভীরতার জন্য মাদার ভেসেল ভেড়ার সুযোগ থাকায় একসঙ্গে ৮ হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। ফলে এখান থেকে ফিডার ভেসেলের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য বন্দরে কনটেইনার পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের আমদানি-রফতানির হার বাড়ছে।
মাতারবাড়ীতে সরকারের আরো প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৫ সালের আগস্টে মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এই প্রকল্পেরও ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকা। বাকি ৫ হাজার কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে। অবশিষ্ট অর্থের যোগান দেবে কেন্দ্রটির বাস্তবায়নকারী ও স্বত্বাধিকারী সিপিজিসিবিএল।