ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত দিনে দিনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। সে তুলনায় বাড়েনি আবাসন ও পরিবহন সুবিধা। দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক সমস্যা প্রকট হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত একাডেমিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পিছিয়ে পড়ছেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড থেকেও। শতবর্ষ পেরিয়েও র্যাকিংয়ে কোনো ভালো স্থান দখল করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। এসব সমস্যার কবে সমাধান হবে, সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে ১৮টি হলে আবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক মিলিয়ে ১৭ হাজার ৬০ জনের আবাসন সুবিধা রয়েছে, যা মোট শিক্ষার্থীর ৪৬ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরেকটি তথ্য অনুযায়ী, মোট শিক্ষার্থীর ৬০ শতাংশই আবাসিক হলে অবস্থান করছেন।র
কিন্তু আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এ হলে নতুন শিক্ষার্থী সংযুক্ত করা না হলে বিদ্যমান অন্যান্য হলে এ সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সংযুক্ত করা হবে। এছাড়া এ বছর নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়া আরও ৩০ জন শিক্ষার্থী বিদ্যমান আবাসন ব্যবস্থায় ভাগ বসাবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৮টি রুটে মোট ৭৪টি বাস চলাচল করে। পরিবহন অফিসের তথ্যমতে, ৭৪টি বাসের মধ্যে দোতলা বাস ৫০টি এবং একতলা ২৪টি। দোতলা বাসে আসন ৮৪টি আর একতলায় ৫২টি। সবমিলিয়ে বাসে মোট আসন পাঁচ হাজার ৪৪৮টি, যা মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ১৪ শতাংশ।
বাসে আসনের সমান সংখ্যক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করেন। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের ঝুলে যেতেও দেখা যায়। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন রুটে পরিবহন সুবিধা না থাকায় সেসব শিক্ষার্থীদের নিজ খরচে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে ক্লাসে আসতে হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে সব বাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে যাওয়ার কারণে রাত ১০টায় লাইব্রেরি থেকে পড়া শেষ করে শিক্ষার্থীদের বাসায় ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
কয়েক দশক ধরে সংকট চলতে থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়কে ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে ধরে নিয়েই চলছেন। শিক্ষার্থীরা আবাসন ও পরিবহন সুবিধা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিজেদের টিকিয়ে রাখছেন।
আবাসন ও পরিবহন নিয়ে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ হাজার ৫১০ জন শিক্ষার্থীর ‘স্বাভাবিক’ আবাসন ও পরিবহন সুবিধা ভোগ করার সুযোগ নেই। এই সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ৩৯ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রতি বছর পরিবহন সুবিধা ভোগের জন্য আলাদা টাকা দিতে হচ্ছে। কিন্তু তাদের যে পরিমাণ সুবিধা থাকা প্রয়োজন তার থেকে বিদ্যমান সুবিধা খুব নগণ্য।