ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কে ছড়িয়েছে সারা বিশ্বে। এই পরিস্থিতিতে টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি ভাইরাসের নতুন ধরন রুখতে করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরাও। তবে আদৌ তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন কি না, তা নিয়ে সংশয়ের মাঝেই টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়া সিঙ্গাপুরের দুই বাসিন্দা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এদিকে টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও ওমিক্রনে আক্রান্ত সিঙ্গাপুরের ওই দুই রোগীর মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। ২৪ বছর বয়সী ওই নারী দেশটির বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বিমানবন্দরের সকল কর্মীর নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করা হলেও চলতি সপ্তাহেই ওই নারীর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে পাঠালে তিনি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়। সিঙ্গাপুরের স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে এটিই প্রথম ওমিক্রনের সংক্রমণ। সিঙ্গাপুরে নিয়মিত প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে, বিমানবন্দরের কর্মীদেরও প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিয়মিত এই পরীক্ষাতেই ওই নারী ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওমিক্রনে আক্রান্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি ৪৬ বছরের এক বাসিন্দা। তিনি গত ৬ ডিসেম্বর জার্মানি থেকে সিঙ্গাপুরে ফেরেন। বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করা হলে তার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও, পরদিনই সর্দি হওয়ায় তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। সেখানে করোনা পরীক্ষা করা হলে, তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। পরে তার করোনার ধরন ওমিক্রন বলে শনাক্ত করা হয়।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ওই দু’জনই করোনা টিকার উভয় ডোজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি বুস্টার ডোজও নিয়েছিলেন। তারপরও ওমিক্রন সংক্রমণ থেকে তারা রক্ষা পাননি।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ‘ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রামক ক্ষমতা ও বিশ্বজুড়ে যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, তা মাথায় রেখে আগামী দিনে দেশের সীমান্তে ও অভ্যন্তরে আরও আক্রান্তের খোঁজ মিলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।’
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হওয়ার পর ওই দু’জনকেই সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশিয়াস ডিজিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানেই তারা আইসোলেশনে রয়েছেন। একইসঙ্গে বিগত কয়েকদিনে তাদের সংস্পর্শে যারাই এসেছিলেন, তাদের সকলকে চিহ্নিত করে পরবর্তী ১০ দিনের জন্য আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ফাইজার-বায়োএনটেক দাবি করে, তাদের টিকার দুটি ডোজ করোনার প্রাথমিক ধরনের বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা দেয়, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে সেই সুরক্ষা পেতে তিনটি ডোজের প্রয়োজন।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) টিকা পরামর্শদাতা কেট ও’ব্রায়েন বলেন, ‘করোনা টিকার অতিরিক্ত ডোজ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় কি না, সেই তথ্য খতিয়ে দেখছে ডব্লিউএইচও। তবে এখনই বুস্টার ডোজ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’