ভরা মৌসুম হলেও শীতকালীন সবজির বাজারে কোন সবজির দামই কমছে না। আমরা মাছে ভাতে বাঙালি হলেও বিভিন্ন ধরনের সবজি সবারই প্রিয়। সবজির বাজারে আগুনের কারণে সাধারণ মানুষকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তবে চাষিরা ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যেসব ফসল টিকে ছিল, সেগুলো দ্রুত বাজারে ছেড়ে দিয়ে আবার ফসল ফলানোর চেষ্টা করছেন। ফলে হয়তো কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে। এমনকি শীতের শেষের দিকেও সেই সময়টা হতে পারে বলে জানান কৃষকরা।
চাঁদপুর পৌরসভার বিপণীবাগ ও পালবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০/২৫ টাকা দরে। তবে ২/৩ টাকা কমেও বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বিচিওয়ালা সীমের কেজি ৬০ টাকা এবং বিচি ছাড়া ৪০/৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বরবটি ৮০ টাকা কেজি, গাজর ৩০, পুঁই ও পালং শাকের কেজি ৪০ টাকা, খিরাই ৩৫/৪০, শালগম ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫/৪০ টাকা কেজি, ধনে পাতার কেজি ১২০ টাকা, সীমের বিচি ২২০ টাকা কেজি, কালা বেগুন ৫০/৫৫ টাকা, মূলার কেজি ৪০ টাকা, বেগুন ৬০/৭০ টাকা, টমেটোর কেজি এখনো ৩৫ টাকার উপরেও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা মরিচের কেজি এখনো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পালের বাজারের কাঁচা সবজি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকল কিছুর দামই বাড়তি, কোন কিছুর দামই কমছে না। যদিও এই সময় সকল সবজির দাম অনেক কমে যাওয়ার কথা। শীত শুরু হওয়ার আগের বৃষ্টিই ফসলের অনেক ক্ষতি করেছে, তাই পর্যাপ্ত মাল আসছে না আড়তে।
এ ব্যাপারে পালের বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি বলেন, এই সময় সবজির দাম এতো বেশি হওয়া খুবই আশ্চর্যের বিষয়। যেই মূলার ডেরার দাম এই সময় থাকার কথা ৫/১০ টাকা হালি, সেখানে বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আমরা এই মওসুমে কম দামে সবজি কিনে খাই। তাও আর হলো কোথায়?
আরোও কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। মাছ না হলেও সবজি দিয়েও চালিয়ে যাওয়া যেত। কি করব বুঝতে পারছি না।
বারোমাসি চাষি লক্ষীপুর গ্রামের খাজে আহাম্মদ জানান, হয়তো শীতে মানুষ কম দামে সবজি কিনে খেতে পারছে না। কিন্তু আমার বিশ্বাস শীত শেষ হলেই পর্যাপ্ত সবজি উৎপাদন হবে। যার কারণে সামনের দিনগুলোতে ক্রেতারা কম দামে সবজি খেতে পারবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষ চাঁদপুরের অনেক জায়গায় শহরের তুলনায় গ্রামের বাজারে সবজির দাম কিছু কমে পাওয়া যায় বলে জানান অনেকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন জানান, পৌষ মাসের শেষের দিকে অসময়ে বৃষ্টির কারণে সারাদেশের মতো চাঁদপুরেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারছে না চাষিরা। যার কারণে একদিকে ফসলের উৎপাদন কমেছে এবং বেশি দামে ফসল বিক্রি করে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে কৃষকরা। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সব কিছুর দাম সহনীয় পর্যায়ে এসে যাবে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের চাষাবাদ ফলপ্রসূ করতে নিরলনসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বীজ থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দিয়ে আসছি।