করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণে করোনা টিকা ফাইজারের চেয়ে স্পুটনিক ৫ অধিকতর কার্যকর। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, স্পুটনিক ৫ টিকার ফলে সৃষ্ট করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা ফাইজারের চেয়ে বেশি থাকে।
বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতালির স্পালানজানি ইনস্টিটিউট ও রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের এক যৌথ গবেষণায় সম্প্রতি উঠে এসেছে এ তথ্য।
দুই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা মোট ৬৮ জন স্বেচ্ছাসেবকের রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ৫১ জন স্পুটনিক ৫ এর দুই ডোজ এবং ১৭ জন ফাইজারের দুই ডোজ টিকা সম্পূর্ণ করেছেন। এই ৬৮ জনের প্রত্যেকেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন তিন থেকে ছয় মাস আগে।
স্বেচ্ছাসেবকদের রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করার সময় বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৬ মাস পরও স্পুটনিক ৫ টিকার ফলে সৃষ্ট অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা থাকে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ।
অন্যদিকে, প্রথম দিকে ব্যাপক শক্তিশালী হলেও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার ফলে সৃষ্ট অ্যান্টিবডি। ৬ মাস পর এই টিকার অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা থাকে ৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
তবে ওমিক্রন থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বুস্টার ডোজের কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছে স্পুটনিক ৫ টিকার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালিয়া ইনস্টিটিউট। গত মাসে এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, স্পুটনিক ৫ টিকার দুই ডোজের পর তৃতীয় বা বুস্টার ডোজে যদি স্পুটনিক লাইট টিকা নিলে ওমিক্রন থেকে ব্যাপক সুরক্ষা ভোগ করেন টিকা গ্রহনকারী।
গামালিয়া ইনস্টিটিউটের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) প্রধান নির্বাহী কিরিল দিমিত্রিয়েভ রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘স্পুটনিক ৫ টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পর যারা স্পুটনিক লাইটের বুস্টার ডোজ নেবেন, তারা ডেল্টা ও ওমিক্রন- দুই ভাইরাস থেকেই কার্যকর সুরক্ষা ভোগ করবেন।’
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া ওমক্রিনের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হলেও রাশিয়ায় অবস্থা কিছুটা ভিন্ন। দেশটিতে এখনও প্রাধান্যবিস্তারকারী ধরণ ডেল্টা। এ কারণে করোনায় মৃত্যুহারও বেশি রাশিয়ায়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৬০০ জন।