ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশিং করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ সপ্তাহ ২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) দেওয়া বক্তব্যে এ নির্দেশ দেন তিনি।
রাজারবাগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বিশ্বাস জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্য পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। কাজেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব এবং বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
‘এ লক্ষ্য অর্জনে পুলিশ বাহিনী যথেষ্ট ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও রেখে যাবে বলে বিশ্বাস করি। কারণ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য। ’
স্বাধীনতা অর্জনে ত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মনে রাখবেন জাতির পিতার দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়। আপনাদের পূর্বসূরিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সব আঘাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
’৭৫-এর ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগে প্রথম পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানের ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘এ রাজারবাগে যারা শহীদ হয়েছিলেন, তাদের কথা মনে রাখতে হবে। তারা আপনাদেরই ভাই। ….তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায়। ’
জরুরি সেবা ৯৯৯সহ অন্যান্য অ্যাপসভিত্তিক সেবা জোরদার করার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, জরুরি সেবা ৯৯৯। এ সেবার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী দ্রুত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছে। যেটা মানুষের ভেতরে একটা আস্থা বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশের প্রতি মানুষের বিশ্বাসও বেড়েছে।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় পুলিশের মানবিক বিভিন্ন কাজেরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা এবং কমিউনিটি ব্যাংক, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য আজীবন রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা, চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী ও গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যদের আর্থিক অনুদান বাড়ানো, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভাগীয় পর্যায়ের পুলিশ হাসপাতাল করাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিবছর ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন যুগোপযোগী ট্রেনিং মডিউল প্রণয়ন, ট্রেনিং মডিউলের মধ্যে মানবাধিকার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করাসহ বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র বাড়ানোর কথাও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠান পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের শান্তির সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে নব উদ্যমে কাজ করার প্রেরণা যোগাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৫ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), ২৫ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা, ৫০ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা দেওয়া হয়।
এছাড়া ২০২০ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৫ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), ২৫ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা, ৫০ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা দেওয়া হয়।
পদকপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বাহিনীর অন্য সদস্যদের এ পদাঙ্ক অনুসরণ করে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাহসী ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ সার্ভিসের কৃতি সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের প্রতিটি অনুষ্ঠান যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক অনুষ্ঠিত হবে।