আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইয়েমেনে লড়াইয়ে প্রায় ২ হাজার শিশুযোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মে মাসের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির যুদ্ধক্ষেত্রে এই বিপুল সংখ্যক শিশুযোদ্ধা প্রাণ হারায়।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে রোববার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
শনিবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশু-কিশোরদের মাঝে নিজেদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিতে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেনের সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উৎসাহিত করতে দেশটির হুথি বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি ক্যাম্প এবং একটি মসজিদকে ব্যবহার করছে বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের চার সদস্যের প্যানেল জানিয়েছে, শিশুদের হুথি বিদ্রোহীদের স্লোগান দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এই স্লোগানে ‘আমেরিকার মৃত্যু, ইসরায়েলের মৃত্যু, ইহুদিদের প্রতি অভিশাপ, ইসলামের বিজয়’ উচ্চারণ করা হচ্ছে। তাদের ভাষায়, ‘একটি ক্যাম্পে ৭ বছর বয়সী শিশুদেরও অস্ত্র পরিষ্কারের এবং রকেট হামলার শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে।’
প্যানেল আরও জানিয়েছে, ২০২০ সালে যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ হারানো ১ হাজার ৪০৬ জন শিশু যোদ্ধার নামের তালিকা তাদের হাতে এসেছে। এছাড়া ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাসের মধ্যে নিহত আরও ৫৬২ জন শিশুযোদ্ধার তালিকাও জাতিসংঘের হাতে রয়েছে। এসব শিশুযোদ্ধাকে হুথি বিদ্রোহীরা নিয়োগ করেছিল।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহত প্রায় ২ হাজার শিশু যোদ্ধার বয়স ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু আমরান, হাজ্জাহ, হোদেইদাহ, ইব্ব, সাদা এবং সানায় নিহত হয়।
অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এই যুদ্ধে শিশুদের ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে যোদ্ধা হিসেবে অল্পবয়সীদের নিয়োগের কাজে স্কুল, ক্যাম্প ও মসজিদকে ব্যবহার না করতে সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। একইসঙ্গে এই কাজে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।