আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বে টালমাটাল আন্তর্জাতিক তেলের বাজার। রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন সতর্কবার্তার পর সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম দাঁড়িয়েছে গত সাত বছরের মধ্য সর্বোচ্চ। ওয়াশিংটনের কথা সত্য হলে অর্থাৎ পুতিন বাহিনী সত্যি ইউক্রেন আক্রমণ করলে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্সের।
সোমবার বাংলাদেশে সময় সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম দেখা গেছে প্রতি ব্যারেল ৯৫ দশমিক ৫৬ মার্কিন ডলার। এর কিছুক্ষণ আগে তার দাম একলাফে ১ দশমিক ১২ ডলার বেড়ে ৯৬ দশমিক ১৬ ডলারে পৌঁছেছিল, যা ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
দাম বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটেরও (ডব্লিউটিআই)। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডব্লিউটিআইয়ের দাম ১ দশমিক ২৮ ডলার বেড়ে ৯৪ দশমিক ৩৮ ডলার হতে দেখা যায়। তবে একপর্যায়ে এর দাম ব্যারেলপ্রতি ৯৪ দশমিক ৯৪ ডলারে উঠেছিল, যা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
সম্ভাব্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারে ভালোই প্রভাব ফেলেছে। রোববার ওয়াশিংটন বলেছে, রাশিয়া যেকোনো সময় আশ্চর্যজনক কোনো অজুহাত তৈরি করে ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে।
নিউইয়র্কভিত্তিক ফরেন এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ওনাডার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া বলেছেন, ইউক্রেনে আক্রমণ হলে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০০ ডলার ছাড়াতে কোনো বাধা থাকবে না। তার মতে, ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কিত খবরাখবরের জন্য তেলের বাজার খুবই অস্থির ও সংবেদনশীল থাকতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা ছাড়াও তেলের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে বিশ্বের তেল রপ্তানিকারকদের উৎপাদন ঘাটতিও প্রভাব ফেলছে। ওপেক ও এর মিত্ররা (ওপেক প্লাস) আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত দৈনিক চার লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও তা পূরণ করতে পারছে না।
আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) জানিয়েছে, জানুয়ারিতে ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন ও লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ব্যবধান বেড়ে দৈনিক নয় লাখ ব্যারেলে পৌঁছেছে। জেপি মরগানের হিসাবে, শুধু ওপেকের ক্ষেত্রে এই ব্যবধান দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার দিকেও নজর রাখছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে সোমবার এক ইরানি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, আলোচনার পথ ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
তেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানিগুলো। গত সপ্তাহে তারা চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেল শোধনাগার চালু করেছে।