ভোক্তাকন্ঠ প্রতিনিধি: দেশে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৮৩৮ জনের মাঝে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের বয়সসীমা ২১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে সকলে থাকলেও এর মধ্যে ২১-৩০ বছর বয়সীরা বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। যা কিনা মোট আক্রান্তের ২১ শতাংশ। আর মোট আক্রান্তের ১৯ ভাগ ৩১-৪০ বছর বয়সীরা। এরপর রয়েছেন ৪১-৫০ বছরের মানুষ। শতকরার হিসাবে যা ১৫ শতাংশ।
আজ শুক্রবার কোভিড-১৯ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ( প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানাও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় ডা. সেব্রিনা বলেন, ‘রোগীদের বয়সের বিশ্লেষণে দেখা গেছে ২১-৫০ বছরের মধ্যে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। আবার নারী-পুরুষ সংক্রমণের হার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে শতকরা ৬৮ শতাংশ পুরুষ আর ৬২ শতাংশ নারী আক্রান্ত হয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে শতকরা ৬৮ ভাগ মানুষ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৩২ ভাগের হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। তবে এখানে আমি একটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে চাই। তা হলো এই ৩২ ভাগেরও অনেকের হাসপাতালে হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তাদেরকে বিভিন্ন কারণে হাসপাতালে যেতে হয়। তারমধ্যে একটি হচ্ছে, সামাজিকভাবে তাদের ওপর চাপ ছিল। তারা যেন বাড়িতে না থেকে হাসপাতালে যান।
ডা. সেব্রিনা বলেন, ‘আমি এখানে বলতে চাই, একজন রোগী যদি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন, সারা বিশ্ব এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাদের উৎসাহিত করেছে। তবে সেক্ষেত্রে রোগী হোম আইসোলেশনে থাকবেন স্ট্রিক্টলি। একটি ঘরের ভেতরে থাকবেন এবং তারসঙ্গে যেন অন্য কারও মেলামেশা না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আর এটা করা গেলে রোগীর জন্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্যও একটি ভালো পদক্ষেপ। আমরা যদি যাদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই, যাদের মৃদু লক্ষণ উপসর্গ রয়েছে কিংবা খুবই কম তাদেরকে হাসপাতালে পাঠালে হাসপাতালের ওপরও চাপ পড়ে।
এছাড়াও তিনি দেশের করোনায় আক্রান্ত রোগীদের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৪৬ ভাগ রোগী ঢাকা শহরে। এরপর নারায়ণগঞ্জে শতকরা ২০ ভাগ এবং অনেক এলাকাতে নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার তথ্য পাচ্ছি। তার মধ্যে গাজীপুর, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জেও নতুন করে রোগী দেখা যাচ্ছে। আবার ঢাকা শহরের মধ্যে সংক্রমিত রোগী বেশি রয়েছে। এরমধ্যে মিরপুরে সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আমরা দেখেছি টোলারবাগে সংক্রমণ বেশি ছিল, এখন মিরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল এবং টোলারবাগ-পুরোটা এলাকা জুড়েই। এটার শতকরা হিসেবে প্রায় ১১ ভাগ। এরপরে মোহাম্মদপুর, ওয়ারী ও যাত্রাবাড়ীতে শতকরা চার ভাগের মতো সংক্রমিত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। তারপর রয়েছে উত্তরা এবং ধানমন্ডিতে শতকরা তিন ভাগ।
তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, যাদের হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ নম্বরে কল করলে সেখান থেকেই চিকিৎসা সর্ম্পকিত প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন।’ এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআরের চিকিৎসকরাও রোগীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এবং আরো বিভিন্ন পরামর্শ দেন তিনি।