নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
রাজধানীতে গত কয়েকদিন ধরে যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর থেকে এই পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর স্থানে স্থানে যানজট নাগরিক দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলেছে। রাস্তায় যাত্রী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মেট্রোরেল, ঢাকা উড়াল সেতু, বিভিন্ন স্থানে সড়ক নির্মাণ ও প্রশস্তকরণ কাজের জন্য চলাচলের রাস্তা কমে গেছে রাজধানীতে।
বুধবার (৯ মার্চ) সকাল আটটায় রাজধানীর মিরপুর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যেতে যেতে যানজট চোখে পড়ল বিভিন্ন স্থানে। তার মধ্যে তীব্র যানজট ছিল মৌচাক-মালিবাগ উড়ালসেতুর মগবাজার অংশ থেকে বেইলী রোডের দিকে যাওয়ার পথে।
সেখানে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত চারদিন ধরে রাজধানীতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ কারণে আমাদের ট্রিপ কমে গেছে। আগে যেখানে দিনে ৩-৪ হাজার টাকা আয় করা যেত সেখানে এখন এক হাজার টাকাও আয় করতে পারছি না। অটোরিকশার মালিককে দিনের জমা দিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
মোটরসাইকেল চালক হাসনাত ইমাম বলেন, মিরপুর-১২ নম্বর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে আগে প্রায় ৪০ মিনিট লাগত, এখন লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। আমাদের ট্রিপও কমে গেছে।
অটোরিকশার যাত্রী সাইমুম ইকবাল বলেন, একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আগেভাগেই বাসা থেকে বের হয়েছি। তারপরও পথে আটকা পড়তে হলো। ঢাকায় একের পর এক ফ্লাইওভার তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু যানজট নিরসন হচ্ছে না। বরং যানজট দিন দিন বাড়ছে। আমরা যেন এক অবরুদ্ধ নগরীতে আছি।
মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে যাওয়ার পথে যানজট চোখে পড়ে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, তালতলা, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, সাতরাস্তার বিভিন্ন অংশে।
ফার্মগেট বাস বে-এর কাছে বাসের জন্য অপেক্ষারত যাত্রী খায়রুল ইসলাম বলেন, যানজট থাকায় ফিরতি বাস আসতে দেরি হচ্ছে। তাই অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হচ্ছে। বিমান বন্দরের দিকে যাওয়ার জন্য কোনো বাস পাচ্ছি না।
এই এলাকায় দেখা গেলো, মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য চলাচলের রাস্তা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। এই প্রকল্পের জন্য মিরপুর-১২ নম্বর, পল্লবী, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, ফার্মগেট, শাহবাগ, বাংলামোটর এলাকায় যানবাহন চলাচল করছে সংকীর্ণ সড়ক দিয়ে।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক অবশ্য বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল চালু করা হলে যানজট কমে যাবে।