ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের অস্থিরতার কারণে কৌশলে ফায়দা লুটছেন কিছু ব্যবসায়ী। বাড়তি দামের আশায় বিক্রি কমিয়ে মজুত করছে একশ্রেণির ব্যবসায়ী। আবার কোনো কোনো কোম্পানি তেল বিক্রিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের অভিযানে এসব অনিয়ম উঠে এসেছে।
সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কয়েকটি ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানি ও পাইকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, তারা তেল বিক্রিতে পাকা রসিদ ব্যবহার করছে না। কার কাছে তেল বিক্রি করছে, তার কোনো নাম-ঠিকানাও থাকছে না। এদিকে পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো পাইকারি ক্রেতাদের যে সরবরাহ আদেশ দিচ্ছে, সেখানে কোনো ইউনিট মূল্য অর্থাৎ লিটার বা মণপ্রতি দাম উল্লেখ করছে না। এটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক নিয়োগ আদেশ-২০১১-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ব্যবসায়ীরা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণের প্রস্তাব করে। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাড়তি দামের প্রস্তাবে সায় দেয়নি। এরপর থেকে বাজারে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। অথচ কোম্পানিগুলোর কাছে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে এবং বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সরকার ভোজ্যতেলের স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। আর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ শতাংশ কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি এলসি মার্জিন শূন্য করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ মার্চ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন কোন কোম্পানির কাছে কী পরিমাণ তেল আছে, তার একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। ওই প্রতিবেদেন দেখা গেছে, সমিতির সদস্য ৬ কোম্পানির কাছে বর্তমানে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬৩৬ টন ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে। এর মধ্যে পরিশোধিত ১৯ হাজার ৭৩৭ টন এবং অপরিশোধিত ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৯ টন।
আর আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার ৮০০ টনের। বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে বছরে মোট ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে।
এতে মাসে গড়ে দেড় লাখ টনের কিছু বেশি ভোজ্যতেল দরকার পড়ে।