ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: টানা দরপতন আর লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বুধবার (৬ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার। আর ডিএসইতে আজ এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
শেয়ারবাজারে এমন টানা দরপতন ও লেনদেন খরা দেখা দিলেও গত ৩০ মার্চ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, রমজান মাসে স্টক ব্রোকার ও ট্রেকহোল্ডাররা প্রতিটি ডিলার অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে এক কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করবেন। একই সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো নিজস্ব পোর্টফোলিওর মাধ্যমে নতুন করে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা আইসিবির মাধ্যমে বিনিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে এমন ঘোষণা আসার পর শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। কিন্তু গত সোমবার থেকে আবার টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। এমনকি প্রতিদিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতার ঘর শূন্য পড়ে থাকছে। অর্থাৎ এসব শেয়ারের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফল স্বরূপ লেনদেনও ধারাবাহিকভাবে কমছে।
ধারাবাহিকভাবে লেনদেন কমতে কমতে বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত বছরের ১১ এপ্রিলের পর ডিএসইতে আর এতো কম লেনদেন হয়নি। গত বছরের ১১ এপ্রিল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪৫৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৬৬২ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা তিনদিনের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১০৯ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৪৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বাজারটিতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৩টি। আর ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৪টির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে পৌঁছে যায়। এরপরও লেনদেনের এক পর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
লেনদেন খরার বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪০ কোটি ৬২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৪০ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাট্টালী টেক্সটাইল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, বিবিএস কেবলস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ওরিয়ন ফার্মা, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং মিলস এবং নাহি অ্যালুমেনিয়াম।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৬টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।