ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক
রহস্যময় হেপাটাইটিস রোগ ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ-আমেরিকায়। এতে এক শিশু মারা গেছে, আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ১৬৯ জন। এখন পর্যন্ত ১২টি দেশে শনাক্ত হয়েছে প্রাণঘাতী এ অসুখ। গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ছোট বাচ্চাদের মধ্যে অজ্ঞাত উৎস থেকে গুরুতর হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। হেপাটাইটিস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে নাকি এ সম্পর্কে সচেতনতা, তা এখনো পরিষ্কার নয়। প্রাথমিকভাবে অ্যাডেনোভাইরাসকে এ সংক্রমণের জন্য দায়ী মনে করা হচ্ছে। তবে এর সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গত ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬৯ জনের শরীরে রহস্যময় হেপাটাইটিস শনাক্ত হয়েছে। এটি পাওয়া গেছে ইউরোপ অঞ্চলের ১১টি ও আমেরিকা অঞ্চলের একটি দেশে। সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে যুক্তরাজ্যে (১১৪ জন)। এছাড়া স্পেনে ১৩, ইসরায়েলে ১২, যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ডেনমার্কে ছয়, আয়ারল্যান্ডে পাঁচ, নেদারল্যান্ডসে চার, ইতালিতে চার, নরওয়েতে দুই, ফ্রান্সে দুই, রোমানিয়ায় এক ও বেলজিয়ামে একজন আক্রান্ত হয়েছে।
আক্রান্তদের বয়স এক মাস থেকে ১৬ বছর। এদের মধ্যে এক শিশু মারা গেছে ও ১৭ জনের লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের প্রয়োজন পড়েছে।
রোগীদের মধ্যে গুরুতর হেপাটাইটিস বা লিভারে প্রদাহের উপসর্গ দেখা গেছে। এতে লিভারের এনজাইম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গও দেখা গেছে, যার মধ্যে পেটেব্যথা, ডায়রিয়া এবং গুরুতর হেপাটাইটিসের আগে বমি হওয়া, লিভারের এনজাইম বেড়ে যাওয়া, জন্ডিস উল্লেখযোগ্য।
বেশিরভাগ রোগীর শরীরে জ্বর ছিল না। সাধারণ ভাইরাস যেগুলো গুরুতর ভাইরাল হেপাটাইটিস সৃষ্টি করে (হেপাটাইটিস ভাইরাস এ, বি, সি, ডি এবং ই), এক্ষেত্রে সেগুলোর কোনোটিই শনাক্ত হয়নি। এর সঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ বা অন্য দেশের ঘটনাগুলোর মধ্যে যোগসূত্রও এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরীক্ষায় কমপক্ষে ৭৪ জনের শরীরে অ্যাডেনোভাইরাস, ২০ জনের শরীরে সার্স-কভ-২ এবং ১৯ জনের শরীরে অ্যাডেনোভাইরাস ও সার্স-কভ-২ উভয়ই শনাক্ত হয়েছে।
রহস্যময় অসুখটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সংক্রমিত দেশগুলো বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করেছে। চলমান তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতা করছে ডব্লিউএইচও এবং ইসিডিসি।