বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধি প্রস্তাবের গণশুনানি চলছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধি প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হয়েছে। বুধবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ শুনানি শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বর্তমান দর ইউনিট প্রতি পাঁচ দশমিক ১৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে আট দশমিক ৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।

বিপিডিবির এই প্রস্তাব গ্যাসের বর্তমান দর বিবেচনায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি হলে নয় দশমিক ১৪ টাকা এবং ১২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলে নয় দশমিক ২৭ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিইআর টেকনিক্যাল কমিটি ভর্তুকি ছাড়া আট দশমিক ১৬ টাকা করার মতামত দিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

প্রথমে বিপিডিবি তাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন। এরপর বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি তাদের সারসংক্ষেপ উত্থাপন করবেন। এরপর শুরু হবে উন্মুক্ত শুনানি পর্ব।

রাজধানীর বিয়াম অডিটরিয়ামে গণশুনানি গ্রহণ করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে গণশুনানি গ্রহণে উপস্থিত রয়েছেন সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী, বজলুর রহমান, মোহাম্মদ আবু ফারুক ও মো. কামরুজ্জামান।

কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘কারো মৌখিক কথায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, তেলের দাম বাড়ানো সম্ভব নয়। এ জন্য আমাদের আইন ও প্রবিদানের উপরে নির্ভর করতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভোক্তাদের জন্য জন্য সহনীয় দাম নির্ধারণে কাজ করছি। আমরা চাই সমন্বিত ভাবে কাজ করতে।’

এ জন্য বিপিডিবি’র পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাবনার প্রয়োজনীতা প্রমাণের বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে তুলে ধরার জন্য বলেন তিনি।

বিইআরসি সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দর ইউনিট প্রতি পাঁচ দশমিক ১৭ টাকা নির্ধারণ করে। বিদ্যুতের একক পাইকারি বিক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। নিজেরা উৎপাদনের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি ও বেসরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। পাঁচটি বিতরণ কোম্পানির কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করে আসছে। আর নিজেরা ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের শহরাঞ্চলে বিতরণ করে যাচ্ছে।

বিপিডিবি’র পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুতে গড় উৎপাদন খরচ ছিল দুই দশমিক ১৩ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ১৬ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, কয়লার মূসক বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে চার দশমিক ২৪ টাকায়। পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে বিপিডিবির।