ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: হঠাৎ করে দাম বেড়েছে পাম অয়েলের। দুই দিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেলটির দাম বেড়েছে লিটারে ৩ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি, ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপের খবর ও সাম্প্রতিক লোকসান সমন্বয় করার কারণে দাম বেড়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজকুনিপাড়া ও মহাখালী কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাম অয়েল লিটার বিক্রি হচ্ছে ১২৩ থেকে ১৩০ টাকা দরে। যা দুই দিন আগে বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১২৭ টাকা দরে। পাম অয়েলের কারণে খোলা সয়াবিন তেলের লিটারেও বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকার মতো। এ মানের তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ থেকে ১৭৫ টাকা। যা এতদিন বিক্রি হয়েছে ১৭২ টাকা দরে।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাম অয়েল উৎপাদন হয় ইন্দোনেশিয়ায়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বাজারের এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে পাম অয়েল। আর বিশ্বের মোট পাম অয়েল সরবরাহের প্রায় ৬০ শতাংশই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। ফলে দেশটির ওপর নির্ভর করতে হয় অনেক দেশকে। কিন্তু হঠাৎ পাম রপ্তানি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
গত শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া তার অভ্যন্তরীণ বাজারে পাম অয়েলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এতদিন অভ্যন্তরীণ বাজারে যে পরিমাণ তেল বিক্রি হতো তার ৮ গুণ রপ্তানি করা যেত।
কিন্তু দেশটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে অভ্যন্তরীণ বাজারে যে পরিমাণ বিক্রি করা হবে রপ্তানি করা যাবে তা ৬ গুণ। অর্থাৎ স্থানীয় বাজারে এক টন বিক্রি করলে এখন থেকে রপ্তানি করা যাবে ৬ টন। যা আগে করা যেত ৮ টন। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের দরকার হয়। এর মধ্যে পাম অয়েলের ব্যবহার হয় ১২ থেকে ১৩ লাখ টন। যার প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাকি ১০ শতাংশ আসে মালয়েশিয়া থেকে। ফলে ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ে। গত বছরও এপ্রিলের শেষদিকে রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছিল।
দুই দিন ধরে মিল পর্যায়ে কিছুটা দাম বেড়েছে বলে জানান দাম পাইকাররা। তাঁরা জানান, মিলারদের কেউ কেউ গত কয়েক মাসের লোকসান সমন্বয়ের চেষ্টা করছে। তাছাড়া ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে।
পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বলেন, দুই দিন আগে হঠাৎ করে ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। দুই-তিন দিন ধরে মিল পর্যায়ে প্রতি ড্রামে ১২০ থেকে ২০০ টাকা দাম বেড়েছে। তাছাড়া কয়েক মাস লোকসান করেছে কেউ কেউ। তারা এখন হয়তো তা পুষিয়ে নিচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ার পেছনে এটাও একটা কারণ হতে পারে।