ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: কষ্টের টাকা দিয়ে কেনা মোবাইল আসল না নকল তা না বুঝে অনেক ভোক্তা নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছেন। আসল মোবাইল কিনতে গিয়ে নকল মোবাইল কিনছেন অনেকেই। অবশ্য খালি চোখে দেখলে বোঝার উপায় নেই আসল না নকল মোবাইল।
স্যামসাং, নোকিয়া সহ নামিদামি ব্রান্ডের বিভিন্ন মডেলের মোবাইল হুবহু নকল তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে রাজধানী সহ সারা দেশের বিভিন্ন দোকানে। অধিক লাভের আশায় ভোক্তাদের সঙ্গে এমন প্রতারণা নিয়মিত করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।
তবে এসব অসুধা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানী সহ সারা দেশে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সংস্থাটি।
নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের মোবাইলের দোকানগুলোতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। এই মার্কেটে নকল মোবাইল বিক্রি হচ্ছে এমন নির্দিষ্ট সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং মো. হাসানুজ্জামান।
ডাস্টবিনে ময়লা-আবর্জানা ফেলালেও ভোক্তা কর্মকর্তাদের অভিযানের খবর শুনে দোকানের সব নকল মোবাইল ডাস্টবিনে ফেলে দেয় ব্যবসায়ী। তবে ভোক্তা কর্মকর্তাদের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা এবং দৃষ্টিকে এড়াতে পারেনি এই দৃশ্য। হাতেনাতে ধরা খেয়েছেন মোবাইল ব্যবসায়ী।
শাহ আলী মার্কেটের তৃতীয় তলায় ভুঁইয়া টেলিকম নামের মোবাইলের দোকানে এমন ঘটনা ঘটে। ভোক্তা কর্মকর্তাদের অভিযানে দোকানে লুকিয়ে রাখা আরও কিছু নকল মোবাইল বের হয়।
নকল মোবাইল বিক্রি এবং বানানোর অপরাধে ভুঁইয়া টেলিকমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং নকল সব মোবাইল জব্দ করা হয়।
এছাড়া পাশের নুরেজা টেলিকম নামের আরও একটি মোবাইলের দোকানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। দোকানী প্রথমে অস্বীকার করলেও ছাড় দেয়নি ভোক্তা কর্মকর্তারা। নিজেরাই দোকানের বিভিন্ন স্থানে তন্নতন্ন করে খুঁজে নামিদামি ব্র্যাণ্ডের ১৮টি নকল মোবাইল জব্দ করে।
নকল মোবাইল বিক্রির অপরাধে নুরেজা টেলিকমকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং নকল সব মোবাইল জব্দ করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটে নোকিয়া ব্র্যান্ডের মোবাইল নকল করে বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা এখানে এসে দুটি মোবাইলের দোকানে নোকিয়া এবং স্যামসাং সহ নামিদামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল মোবাইল বিক্রির সত্যতা পাই। এবং এটি হাতেনাতে ধরা হয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকারের আইন অনুযায়ী এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব দোকান যেখান থেকে নকল মোবাইলগুলো ক্রয় করেছে সে তথ্যও আমাদের কাছে আছে। আমরা এসব মোবাইল কারখানা বা পাইকারী দোকানগুলোতে অভিযান চালাবো। এভাবে আমরা মূল ফ্যাক্টরিতেও অভিযান চালাতে চাই। যাতে নকল কোনো মোবাইল না বানাতে পারে।
ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মোবাইল কেনার সময় অবশ্যই আইএমইআই নম্বর দিয়ে মোবাইল আসল না নকল জেনে ক্রয় করবেন।
নকল মোবাইল বিক্রির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ পোষাতে অধিক লাভের আসায় নকল মোবাইল বিক্রি করেন। আসল অফিশিয়াল মোবাইল বিক্রির থেকে নকল বা আন অফিশিয়াল মোবাইলে লাভ বেশি।
আসল মোবাইল চেনার উপায়
আইএমইআই নম্বর দিয়ে হ্যান্ডসেটটি আসল কিনা তা আরেকটি উপায়ে চেক করে নিতে পারেন। অর্থাৎ ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আনঅফিসিয়াল এই উপায়ে। সেজন্য যে কোন একটি ফোন থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন বড় হাতের KYD<স্পেস>আইএমইআই নম্বরটি। এরপর সেন্ড করুন 16002 এই নম্বরে।
অফিশিয়াল মোবাইল
যে মোবাইলগুলো সরকারের ট্যাক্স দিয়ে আমাদের দেশে আসছে সেগুলো কে অফিশিয়াল মোবাইল বলে।
আনঅফিসিয়াল মোবাইল
যে মোবাইল গুলো আমাদের দেশের সরকার কে ভ্যাট-ট্যাক্স না দিয়ে আসছে সেগুলোকে আনঅফিসিয়াল মোবাইল বলে।