ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ভোক্তাদের আস্থা অর্জনে চকলেটের পাশেই রেখে দেওয়া হয়েছে খালি মোড়ক। এইগুলো সেই মোড়ক থেকে বের করা হয়েছে কি না এ বিষয়ে নিশ্চিত নয় কেউ। এগুলো নামে মাত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ভ্যান্ডরদের (সাপ্লায়ার) দেওয়া খোলা চকলেট এভাবে প্যাকেটজত বলে চালিয়ে দিচ্ছে সুপার শপ আগোরা।
ভোক্তার সঙ্গে এমন সুক্ষ্ম প্রতারণা এর আগে ধরা পড়েনি।
রোববার দুপুরে গুলশানের আগোরা সুপার শপে অভিযান চালিয়ে এমন প্রতারণা হাতেনাতে ধরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং রজবী নাহার রজনী।
অভিযানে যা ঘটেছিল
নেসলে ক্ল্যাসিক নামে বাংলাদেশে উৎপাদিত চকলেটের মোড়কে বিক্রয় মূল্য লেখা নেই। বিএসটিআই এর মান চিহ্ন থাকলেও লাইসেন্স নাম্বার নেই। এছাড়া আগোরার গোডাউনে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যান্ডরের (সাপ্লাইয়ার) কাছ থেকে খোলা চকলেট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন ভোক্তা কর্মকর্তারা। পরে কর্মকর্তারা জানতে চান, খোলা চকলেট কেন সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে এর কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি তারা। তবে ভোক্তার জন্য সাজিয়ে রাখা খোলা চকলেটের পাশে কিছু মোড়ক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এসব মোড়ক দিয়ে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।
প্রতি কাপ আখের রস বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে এসব আখ বাকল ছাড়িয়ে ৪ থেকে ৫ দিন আগে থেকে ফ্রিজে রাখা হয়েছে। যেগুলো থেকে রস নিঃসরণ করা হয়।
জরিমানা
এসব অপরাধে অধিদপ্তরের ৩৭ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
নিজেদের ভুলের বিষয়ে যা বলছে আগোরা
আগোরার গুলশান আউটলেটের ম্যানেজার মফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, আমরা যে খোলা চকলেট বিক্রি করি এবং খোলা চকলেটের পাশে যে প্যাকেট রেখেছে, চকলেটগুলো সেই প্যাকেটের কি না এটা জানতে চেয়েছেন ভোক্তার কর্মকর্তারা। আমরা ভ্যান্ডরের কাছ থেকে এসব খোলা চকলেট সংগ্রহ করি। কোন প্যাকেটের এ বিষয়ে আমরাও নিশ্চিত নই। আমরা ভ্যান্ডরের মাধ্যমে যেসব চকলেট নিচ্ছি সেগুলোতে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং মূল্য লেখা নেই। এছাড়া বিএসটিআই এর মানচিহ্ন, লাইসেন্স নাম্বার ছিল না। এটা আমাদের ভুল হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের যে জরিমানা করা হয়েছে তা আমরা মেনে নিয়েছি। পরবর্তীতে ভুলগুলো সুধরে নেব।
যা বলছেন ভোক্তা কর্মকর্তা
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, আমাদের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিল, আগোরা খোলা চকলেট বিক্রি করছে। আমরা এসে দেখলাম ভ্যান্ডর খোলা অবস্থায় এই সুপার শপে চকলেট সরবরাহ করছে। আমরা হাতেনাতে ধরেছি। চকলেটে বিএসটিআই এর কোন অনুমোদন ছিল না। চকলেটের প্যাকেট খোলা অবস্থায় ছিল। প্যাকেটজাত অবস্থায় না। এই চকলেটগুলো এসব প্যাকেটের কি না এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আউটলেটের ম্যানেজারও এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করতে পারেননি।
তিনি বলেন, এসব বিদেশী চকলেট যদি দেশেই তৈরি হয় তাহলে তো সম্পূর্ণটাই ভেজাল। যদি এসব চকলেট কেউ খায় তাহলে যেকোনো ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আগোরার থেকে বলা হচ্ছে- এগুলো বিদেশী। তবে যথাযথ কোন কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি।
অন্যান্য অভিযান
এছাড়া গুলশানে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মার্কেটে দিদার সুপার শপ নামের একটি প্রতিষ্ঠানেও অভিযান চালানো হয়। পণ্যের মোড়কে আমদানিকারকের প্রমাণক এবং বিক্রিয় মূল্য লেখা না থাকায় এই প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।