ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কুমিল্লার মাঠে এবারের বোরো মৌসুমে চাষ করা হয়েছে নতুন জাতের ধান, যার নাম বিনা-২৫। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামের মাঠে দেখা মেলে এ জাতের ধানের। ধানটি চিকন ও লম্বা।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্যান্য ধানের চেয়ে এর দাম বেশি। সাধারণ চালের কেজি যদি ৬০ টাকা হয়, এ ধান থেকে পাওয়া চালের কেজি ন্যূনতম ১০০ টাকা হবে। এ চালের ভাত খেতে বেশ মজা।
বৃহস্পতিবার কুন্দারঘোড়ায় কৃষক সমাবেশে বক্তারা জানান, বাজারে মিনিকেট বলে এক ধরনের চাল বিক্রি হয়। বাস্তবে এমন চালের অস্তিত্ব নেই। মেশিনে বার বার ছাঁটাই করে এ চাল বাজারে আনা হয়। যার কারণে পুষ্টিগুণ হারায় এ চাল। নতুন চাষ হওয়া বিনা-২৫ ধান মিনিকেট চালের মতো চিকন। এর ফলন বোরো মৌসুমে আবাদকৃত অন্যান্য ধানের চেয়ে বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে অন্যান্য ধান যদি সর্বোচ্চ ছয় টন হয়, বিনা-২৫ এর ন্যূনতম উৎপাদন হয় সাত টন। অন্যান্য ধানের চেয়ে এর জীবনকাল কম। যার ফলে জমিতে সার, সেচ ও খরচ তিনটিই কম লাগে।
তারা জানান, বাংলাদেশে চিকন চালের চাহিদা মেটাবে বিনা-২৫ ধান। এছাড়া এটি বিদেশেও রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। কুমিল্লার মাঠ থেকেই এ স্বপ্ন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামের কৃষক আবু বকর শিবলী বলেন, বিনা-২৫ ধানে রোগবালাই কম। এর ফলন দেখে আমরা অভিভূত। তবে এবার বীজের যে চাহিদা, তাতে মনে হয় চাল খেতে পারব না।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, যতটুকু বীজ পেয়েছি তা দিয়েই আমরা এ এলাকায় বিনা-২৫ ধান চাষ শুরু করেছি। আগামীতে আরও বেশি এলাকাজুড়ে এর আবাদ করতে চাই।
বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান বলেন, কুমিল্লার মানুষ সৌখিন। তারা চিকন চাল খেতে পছন্দ করেন। বিনা-২৫ কুমিল্লার মানুষের সেই সাধ পূরণ করবে। শুধু কুমিল্লা নয়, কুমিল্লা থেকে এর ব্যাপ্তি পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ মৌসুমে কুমিল্লার ১৭ উপজেলার ১৮ হেক্টর জমিতে প্রথম এই জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এর ফলন বেশি। এ ধান গাছ শক্ত, তাই দুর্যোগ সহনশীল। আবার লম্বা হওয়ায় খড় পাওয়া যায় বেশি।