বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স মোকাবিলায় নতুন টিকার অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পর এবার ইউরোপের দেশগুলোর জন্য এই টিকার অনুমোদন দিলো সংস্থাটি।
সোমবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে সুরক্ষা হিসাবে ইমভানেক্স (Imvanex) ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে ইউরোপীয় কমিশন অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ড্যানিশ বায়োটেকনোলজি কোম্পানি বাভারিয়ান নর্ডিক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) গত সপ্তাহে এই টিকার অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছিল।
সম্প্রতি বিশ্বের একাধিক দেশে হু হু করে বাড়ছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা। গত শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউইইচও) মাঙ্কিপক্সকে গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসাবে ঘোষণা করে। ডব্লিউইইচও’র উচ্চ-স্তরের সতর্কতা জারি করার ঠিক একদিন পরই ইমভানেক্স টিকাকে এই অনুমোদন দেওয়া হলো।
ড্যানিশ বায়োটেকনোলজি কোম্পানি বাভারিয়ান নর্ডিক-এর প্রধান নির্বাহী পল চ্যাপলিন বলেছেন, ‘একটি অনুমোদিত ভ্যাকসিনের উপস্থিতি (মাঙ্কিপক্সের মতো) উদীয়মান রোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দেশগুলোর প্রস্তুতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে। তবে তা শুধুমাত্র বিনিয়োগ এবং জৈবিক প্রস্তুতির কাঠামোগত পরিকল্পনার মাধ্যমে হতে হবে।’
রয়টার্স বলছে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ইমভানেক্স তথা বাভারিয়ানের ভ্যাকসিনই একমাত্র টিকা যেটা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া ইউরোপের দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র গুটিবসন্তের চিকিৎসার জন্য এই টিকা অনুমোদিত হয়েছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ড্যানিশ এই কোম্পানিটি ‘অফ-লেবেল’ (অননুমোদিত ভাবে) ব্যবহারের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশে তাদের ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। তবে ইউরোপীয় কমিশনের অনুমোদনের পর এই টিকা এখন কোম্পানিটি ইউরোপের সকল দেশেই পাঠাতে পারবে।
বাভারিয়ান নর্ডিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউরোপীয় কমিশনের এই অনুমোদনের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সকল সদস্য দেশের পাশাপাশি আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন এবং নরওয়েতেও ইমভানেক্স টিকা সরবরাহ করতে পারবে তারা।
ড্যানিশ এই কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, গত দুই দশকে মার্কিন সরকারের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের মাধ্যমে ইমভানেক্সের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসজনিত অসুখ। স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দু’টি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে— মধ্য আফ্রিকান ও পশ্চিম আফ্রিকান।
রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপাশি শরীরে দেখা দেয় ফোস্কা ও অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি ওঠে। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাত ও পায়ের তালুতে।