ধানের মৌসুমের পর চালের দাম কমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে এবছর আমনের মৌসুমেও চালের দাম কমেনি। প্রথমে সরু চালের দাম; পরে ইরি, পাইজাম ও লতার দাম কেজিতে দুই টাকা করে বেড়েছে।
শুধু চালই নয়, দাম বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, মুরগি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেরও। প্রতি কেজি আলুতে দুই টাকা, পেঁয়াজে দুই থেকে পাঁচ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ও আদার দাম কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে।
ইত্তেফাক সুত্রমতে, তুরাগ এলাকার নতুন বাজারের চাল বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন জানান, গত কিছুদিন ধরেই চালের দাম বাড়তি। পাইকারী বাজারে সব ধরনের চালের দাম বাড়ায় খুচরাবাজারেও দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি। কাওরান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী বেলাল আহমেদ বলেন, ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম বেড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে এক দিনের বাচ্চা ২০/২২ টাকা থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। এছাড়া এখন বিয়ে, পিকনিক, ফ্যামেলি ডেসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। ফলে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। এসব কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর কোনো কারণ ছাড়াই রমজান মাসে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবার রমজানের এক-দেড় মাস আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন। যাতে রমজানে দাম বাড়ানোর জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে না হয়।
সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ১৬ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ নিলেও অত্যন্ত ধীরগতিতে আসছে সেই চাল। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে যাদের চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই মিল মালিক। তাদের একটি অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে ধীরগতিতে চাল আমদানি করছে। অন্যদিকে স্থানীয় বাজারে তারাই চালের দাম বাড়াচ্ছে। তবে চাল আমদানিকারকরা বলেছেন, আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেড়েছে। এছাড়া সীমান্তে জ্যামসহ বিভিন্ন কারণে ভারত থেকে চাল আসতে দেরি হচ্ছে।
নতুন করে ভোজ্য তেলের দাম না বাড়লেও উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে এ পণ্যটি। খুচরাবাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ও খোলা সয়াবিন ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সুপার পাম অয়েল ১০৫ থেকে ১০৭ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনে ৩৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ, বোতলজাত সয়াবিনে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ ও সুপার পাম অয়েলে ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার কথা জানালেও কবে নাগাদ কমতে পারে এ ব্যাপারে কোনো আশার কথা শোনাননি ব্যবসায়ীরা।
দফায় দফায় দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। সারা বছর ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ টন হলেও শুধু রমজানেই পণ্যটির চাহিদা আড়াই থেকে ৩ লাখ টন। এ অবস্থায় রমজানে ভোজ্য তেলের সরবরাহ বাড়াতে এখনই উদ্যোগ না নিলে এর বাজার অস্থির করার সুযোগ নেবে অসাধু চক্র।