ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। মূলত শেষ ঘণ্টার লেনদেনে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী বিক্রির চাপ বাড়ানোয় সূচকের এ পতন হয়েছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
অবশ্য মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুর দিকেই লেনদেন বাড়ার আভাস পাওয়া যায়। প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ১০০ কোটি এবং এক ঘণ্টার লেনদেনে ২০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় ডিএসইতে।
শুরুতে দেখা দেওয়া লেনদেনের এ গতি অব্যাহত থাকে শেষ পর্যন্ত। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৪৬ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এদিকে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেন।
এতে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে একদিকে দরপতনের তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি সূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ২০২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩টির শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কমে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) এসে ঠেকেছে। এতে লেনদেন শেষে ২১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।
অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক কমার দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৫১ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমরা নেটওয়ার্কের ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আলহাজ্ব টেক্সটাইল, জেনেক্স ইনফোসিস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, শাহিনপুকুর সিরামিক, ইউনিক হোটেল, রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স এবং এডিএন টেলিকম।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।