ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ফেব্রুয়ারী মাসের জন্য ১২ কেজির এলপি (বোতলের গ্যাস) গ্যাস ১৪৯৮ টাকা নির্ধারন করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তবে সরকার ঘোষিত এলপিজির এ বোতল ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ১৭০০-১৮০০ টাকায়।
এদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই ব্যাবসায়ীদের এলপিজি গ্যাস বিক্রি করতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান।
বুধবার (দুপুরে) জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে এলপিজির সাথে যুক্ত সকল প্রতিনিধিদের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়ার অভিযোগেই এ সভার আয়োজন করে অধিদপ্তরটি।
এদিকে ভোক্তা পর্যায়ে বেশি দাম নেওয়ার বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার থেকে ১৪৯৮ টাকা বিক্রির বাধ্যবাদকতা থাকলেও ডিলার থেকে প্রতি বোতল এলপিজি তাদের নিতে হচ্ছে ১৬০০-১৭০০ টাকায়। আর এলপিজি ডিলাররা জানান, কোম্পানি থেকেই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে তাদের এলপিজি।
তবে এলপি গ্যাস উৎপাদনকারীরা জানান, ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি, উৎপাদন পর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি, এলসি সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ের কারণে গ্যাসের দাম বেশি পড়ছে। যার কারণে কিছুটা বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও কোম্পানির জন্য বিইআরসি যে দাম নির্ধারন করে দেয়, প্রকৃত উৎপাদন খরচ তার থেকে বেশি পড়ে।
এবিষয়ে বিইআরসি সচিব খলিলুর রহমান বলেছেন, তথ্য উপাত্তের সঠিক হিসাব করেই প্রতি মাসে এলপিজির মূল্য নির্ধারন করে দিচ্ছে তারা। এলপিজি উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং গ্যাসের বর্তমান বাজার দরের উপর ভিত্তি করেই এই দাম নির্ধারন করা হয়।
এদিকে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতার জন্যেই ভোক্তা প্রতারিত হচ্ছে বলে মনে করছেন কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (ক্যাব) প্রতিনিধি এবং ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক আব্দুল হান্নান। বক্তব্যে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাড়তি দাম নেওয়ার বিষয়ে এখানে অনেকেই অনেক যুক্তিতর্ক দিলেন। কিন্তু রাষ্ট্র যে দাম নির্ধারন করে দিয়েছে, সেই দামে আমি এলপিজি চাই। আর এটা আমার অধিকার। এর থেকে বেশি নেওয়া বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, আজকের মতবিনিময় সভা গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার ফলোআপ। গত সভার যে পর্যবেক্ষণ ছিল, এখনও একই অবস্থা আছে। তার কোন প্রভাব গ্যাসের মূল্যের উপর পড়েনি। সকলকে সরকার নির্ধারিত মুল্যেই এলপি গ্যাস বিক্রয় করতে হবে। এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রির সুযোগ নেই। এই সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে সবার সাথে সভা আয়োজনের মাধ্যমে সমন্বয় করার আহ্বান জানচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সভায় এলপি গ্যাসের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে যে সকল সাজেশন এসেছে তা সুপারিশসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে প্রেরণ করা হবে।
এসময়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, এলপিজি কোম্পানি গুলোকে সতর্ক করার জন্যেই এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। তবে কোন কোম্পানি বন্ধ করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না।