ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম বেশ কয়েক মাস পর প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারের নিচে নেমেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (১৬ জুলাই) আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানী তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯৮ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, বাজারে তেলের দর কতটা কমতে পারে। বাংলাদেশের মতো দেশ কি এই সুবিধা পাবে? তবে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম ঠিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাড়েনি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছর বিশ্বজুড়ে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর হঠাৎ চাহিদা বেড়ে গেলে জ্বালানির দাম বাড়তে শুরু করে। ২০২১ সালের নভেম্বরে যখন দেশে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলারের মতো।
এরপর যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দর ১০০ ডলার পেরিয়ে যায়। এই বর্ধিত মূল্যে জ্বালানি আমদানি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ, অন্যদিকে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে গেছে। সব মিলিয়ে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
মহামারির তৃতীয় ঢেউ কাটিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ড চাঙা হওয়ার মুখেই ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্রেন্ট মুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১৩৯ ডলার ছাড়িয়ে যায়। পরে তা কমে ঘোরাফেরা করতে থাকে ১০৫-১১০ ডলারের মধ্যে।
এবার আশঙ্কা, মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র নীতি সুদহার আরও বাড়ালে আর্থিক বৃদ্ধি এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও ধাক্কা খেতে পারে। তাতেই মন্দার জল্পনা বাড়ছে। আর তাতে চাহিদা কমার আশঙ্কায় কমছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
এর আগে গত মাসের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুটা কমেছিলো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
তখন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) জানিয়েছিলো, গতকাল (৩০ জুন) যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ কমে গিয়েছিল। তবে চলতি সপ্তাহে জ্বালানি তেলসহ গ্যাসোলিন ও ডিসটিলেটের মজুদ লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। মূলত পরিশোধন কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রমে গতি ফেরায় ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে মজুদ।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির সূচক আবারও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। আর এই পরিস্থিতিতে মানুষ ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়েছে, যা চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বাড়তি।