খুলনায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: খুলনায় কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রতিনিধি, খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, খুলনা প্রেস ক্লাবের প্রতিনিধি এবং জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব ) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. ইউসুপ আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো. সোহাগ দেওয়ানসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, জেলা ক‌্যাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিডসহ অন্যান্য ক্যাব সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ।

সা‌র্বিক ব‌্যবস্থাপনায় ছি‌লেন ভোক্তা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপ‌রিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন।

সেমিনারে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এবং ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজসহ নিত‌্যপ‌ণ্যের মূল্য কিভাবে স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, খুলনার বিভিন্ন অংশীজন ও ব্যবসায়ীবৃন্দ ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর প্রচার ও বাস্তবায়নে যথেষ্ট আন্তরিক ও সহযোগিতাপ্রবণ।

ভোক্তা-অধিকার রক্ষায় সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা চান তিনি।

পরে অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (প্রচার) মো. শাহ আলম ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ একটি পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।

খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যবহৃত পণ্যের মোড়ক ব্যবহার পর ডিসপোজালের ব্যবস্থা তদারকি করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অসাধু ব্যবসায়ীরা মোড়কজাত পণ্য ব্যবহারের পর খালি প্যাকেট পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে বিক্রয় করে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।

এছাড়াও, গরু মোটাতাজাকরণের বিষয়টিসহ অনলাইনে গরু বিক্রির প্লাটফর্মগুলো তদারকির আওতায় এনে প্রতারণা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আজম ডেভিড বলেন, ভোক্তা-অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তরের চলমান কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে। এটা বেগবান করতে অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।ৎ

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বক্তব্যের শুরুতেই সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং চলমান ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কাজের স্বরূপ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভোক্তা-অধিকার রক্ষায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করছে। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক ভোক্তাকে সচেতন করা যাচ্ছে। এছাড়াও CCMS(Consumer Complaint Management System) এর মাধ্যমে ভোক্তার অভিযোগ দায়ের করা এবং অভিযোগের অবস্থা জানা সহজ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষেত্র বিশেষে চাহিদা বৃদ্ধি পেলেই সেই পণ্যের মূল্য অযৌক্তিক ভাবে বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ভোক্তা-অধিকারবিরোধী এমন কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে অধিদপ্তরের কঠোর তদারকি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাজার বা প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কাজ বা অনিয়ম রোধে বাজার কমিটিকে সক্রিয় হতে হবে।

মুক্ত আলোচনায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অংশগ্রহণকারীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।

সেমিনারের সভাপতি খুলনা জেলা স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. ইউসুপ আলী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সভায় ব্যবসায়ীবৃন্দকে সংশ্লিষ্ট সকল আইন মেনে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানান।

-এসআর