ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: নাটোরের বড়াইগ্রামে ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। অল্প সময়ের ব্যবধানে রকম ভেদে মসলার দাম ১৫০-৩৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্বল্প ও নিন্মআয়ের মানুষসহ সবাই বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব রকম মসলার দামই বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মধ্যে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা দরে, অথচ দুই-তিন মাস আগেও দাম ছিল ৫৫০-৬০০ টাকা। দারুচিনি প্রতি কেজি ৩৫০-৩৬০ টাকা হলেও মাস তিনেক আগেও দাম ছিল ২৬০-২৭০ টাকা। সাদা এলাচ এক হাজার ৪৫০ থেকে এক হাজার ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আগে এটি সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৫০ টাকা দাম ছিলো। ৬৬০ টাকার কালো এলাচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫০-১০৫০ টাকায়। প্রতি কেজি গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩৫০ টাকায়, যা আগে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হতো। ১২০০-১২৫০ টাকা দামের এক কেজি লবঙ্গ এখন ১৫০০-১৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আদা ৮০-৯০ টাকা দাম হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। এছাড়া মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৬০-৭০ টাকা কেজি দামের কাঁচা মরিচ বর্তমানে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
লক্ষ্মীকোল বাজারের মসলা বিক্রেতা সঞ্জয় কুন্ডু বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীরা বগুড়া ও নাটোরের মহাজনদের কাছ থেকে মসলা কিনে আনেন। মোকামে মসলার দাম বেশি, তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজারে প্যাকেটজাত গুড়া মসলার দামও বেড়েছে। প্যাকেটজাত এক কেজি জিরার গুড়া আগে ৮২০-৮৫০ টাকা হলেও এখন এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুকনা মরিচের গুড়া প্রতি কেজি ৬৮০-৭৫০ টাকা হলেও আগে ৪৫০-৪৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গুড়া হলুদ আগে ৩৮০-৪০০ টাকা হলেও এখন ৪৭০ থেকে ৪৮০ টাকা। অন্যান্য প্যাকেটজাত গুড়া মসলার দামও বেড়েছে। এছাড়া রসুন, শুকনো মরিচ ও পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।
জালশুকা বাজারের মুদি দোকানি শফিকুল ইসলাম বলেন, কোম্পানী থেকেই প্যাকেটজাত মসলার দাম বাড়ানো হয়েছে। প্যাকেটের গায়ে তারা যে দাম লিখে দিয়েছেন আমরা সে দামেই বিক্রি করি। আমাদের তো দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই।
মামুদপুর গ্রামের গৃহবধু সোহাগী খাতুন বলেন, নিজেরা কোরবানী দিতে না পারলেও সামাজিক ভাগে গরু ও খাসির মাংস পাওয়া যায়। সে মাংস রান্না করতে মসলা কিনতেই হয়। কিন্তু এবার মসলার দাম অনেক বেশি। এ কারণে প্রয়োজনমত মসলা কিনতে পারিনি, অল্প কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
রোলভা গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুল মালেক বলেন, সব রকম মসলার দাম বেড়ে গেছে। এ জন্য এখনও মসলা কেনা হয়নি। তারপরও কিছু কিছু টাকা জমাচ্ছি, ঈদের আগের দিন সে জমানো টাকায় যতটুকু পারি মসলা কিনবো।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বোরহান উদ্দিন মিঠু বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মসলাসহ দ্রব্যমূল্য যেন বাড়াতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও হাট-বাজার পরিদর্শন করবো। কেউ অযৌক্তিক দাম নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।