বরিশালের মৎস্য আড়ত ইলিশে ভরপুর

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: নদীতে না পেলেও সাগরের ইলিশে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য আড়তগুলো এখন ভরে গেছে। প্রতিদিন একের পর এক ইলিশভর্তি ট্রলার আসছে সাগর থেকে।

শুক্রবার বরিশাল নগরীর পাইকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পোর্টরোড ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ আড়তেই বিক্রি হচ্ছে সাগরের ইলিশ।

আড়তদাররা বলছেন, সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মোকামে সাগরের ইলিশের পরিমাণ বাড়ছে। তবে এ মুহূর্তে নদ-নদীর ইলিশে মোকাম সয়লাব থাকার কথা থাকলেও আশানুরূপ মাছ আসছে না।

জেলেরা বলছেন, তারা নদীতে নিয়মিত জাল ফেললেও যে পরিমাণে ইলিশ পাওয়ার কথা সে পরিমাণে ধরা পড়ছে না। এমন সময় মাছ বাজারের পরিস্থিতি গরম থাকার কথা। অথচ জালে উঠছে না কোনো ইলিশ।

পোর্ট রোডের ইলিশ আড়তদার মেসার্স দুলাল ফিশ’র ম্যানেজার মো. রবিন বলেন, এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা। এছাড়া ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১৩০০ টাকা কেজি, ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। এছাড়া ৪ পিসে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ মণ করে ইলিশ নিয়ে ট্রলারগুলো পোর্ট রোডের মোকামে আসছে। তবে এমন সময় হাজার হাজার মণ ইলিশ আসার কথা। কয়েক বছর আগেও ভরা মৌসুমে পোর্ট রোডের মোকামের আড়তগুলোতে দিন শেষে দুই হাজার মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো।

পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মালিক-সমিতির অর্থ সম্পাদক ইয়ার হোসেন শিকদার বলেন, আমাদের মোট ১৭০টি আড়তে এমন ভরা মৌসুমে আগে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হলেও বর্তমানে বেচাবিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার।

তিনি আরও বলেন, নদী থেকে প্রায় শূন্য হাতে ফেরত আসছে জেলেরা। তাই আড়তে নদীর ইলিশের দেখা মিলছে না। সাগর থেকে কিছু মাছ আসছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই নদীর মাছ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জুলাই-অগাস্ট বর্ষার চিরচেনা এই দুই মাস সাগরের ইলিশের ভরা মৌসুম। নদ-নদীতে বেশি বেশি ইলিশ ধরা পড়বে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ইলিশ সংকটের এ চিত্র এখন দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীতে। কারণ এখন নদীর ইলিশের সময় না। এখন বাজারে যেসব ইলিশ উঠছে তা সব সাগরের ইলিশ। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ধরা পড়বে নদীর ইলিশ।

তিনি আরও বলেন, অনেক জায়গায় চর পড়ে পানির গভীরতা কমে গেছে। বিশেষ করে সাগর মোহনায় নদীর মুখ চর পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে। নদীর গতিপথও পরিবর্তন হয়েছে। যে কারণে ভরা মৌসুমেও মাঝে মাঝে নদীতে ইলিশ আসে না। এর জন্য নদী দূষণও দায়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *