পানি উঠে না টিউবওয়েলে, ওয়াসার পানিও বন্ধ

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) কয়েকটি এলাকায় গত তিন দিন ধরে ওয়াসার পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখানকার বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা ওয়াসার পানি। খাওয়া ও দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় পানির সংকটে চরম বিপাকে পড়েছেন এখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা।

এলাকাগুলো হলো- মুজগুন্নী, গোয়ালখালী ও বাস্তুহারা।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বলেন, জীবন ধারণের জন্য ওই এলাকার মানুষ ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ টিউবওয়েলেও পানি উঠছে না। গত তিন দিন ধরে ওয়াসার পানির না থাকায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। ফলে জীবন ধারণে এই পানির ওপর নির্ভরশীল অনেক পরিবার এক থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে কলস, ড্রাম ও জার ভরে পানি সংগ্রহ করে আনছেন। ওই পানি দিয়ে রান্না ও খাওয়ার কাজ চললেও গোসলের পানি মিলছে না কোথাও। এতে বাধ্য হয়ে অনেকে আশপাশের এলাকায় থাকা স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে গোসল করছেন।

সোমবার সকালে গোয়ালখালি এলাকার ১৭ নম্বর হোল্ডিংয়ের মালিক আবু মুসা বলেন, ১৯ অগাস্ট থেকে আমরা খুব বিপদের মধ্যে পড়ে গেছি। টিউবওয়েলও নেই। ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল সবাই। বাড়িতে ভাড়াটিয়া রয়েছে। সবাই খুব বিপদের মধ্যে পড়েছি। আমাদের এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ পানি বঞ্চিত রয়েছি। গোসল করতে পারছি না। পানির অভাবে ওজুও ঠিক মতো করতে পারছি না।

ভুক্তভোগী মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার ১৭৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের বাড়ির মালিক মো. মুকুল বলেন, ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। বলেছে যত দ্রুত সম্ভব পানি দেবে। কিন্তু কখন লাইন চালু হবে তা কেউ জানে না। পানির জন্য খুবই কষ্টে আছি।

ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া মৌ ইসলাম বলেন, গোয়ালখালী লেবুতলা পানির পাম্পের পাইপ ফেটে যাওয়ার কারণে তিন দিন ধরে পানি না। মুজগুন্নী, গোয়ালখালী, বাস্তুহারাসহ এই এলাকার কয়েক হাজার পরিবার প্রচণ্ড কষ্টে আছে। রান্না ও ধোয়ামোছার কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, ওয়াসা থেকে মাইকিং করেছে যে পানির লাইন মেরামত করা হচ্ছে। পানি পেতে সাময়িক সমস্যা হবে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান লিটন বলেন, ওয়াসার পানি বন্ধ থাকায় ১০-১৫ হাজার মানুষ কষ্টে আছে। লেবুতলা পানির ট্যাংকির সংযোগ খুলে গেছে। তারা আগে মাইকিং করে পানি বন্ধ করেছে। মাইকিংয়ে তিন দিন সময় লাগবে বলে বলা হয়েছিল।

খুলনা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা যায়, খুলনা মহানগরীতে প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২৪ কোটি লিটার। পানির সরবরাহ ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা খুলনা ওয়াসা ৪০ হাজার বাড়িতে দিনে সাত কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারছে। এদিকে শহরের বেশির ভাগ নলকূপেই পানি ওঠে না। এ কারণে বর্তমানে সাবমার্সিবল পাম্পেই ভরসা খুঁজতে হচ্ছে খুলনার মানুষকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *