ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: নোয়াখালীতে মাছ-মাংসে হাত দিতে পারেন না অনেক সাধারণ ক্রেতা। সবজির বাজারও চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। নোয়াখালীর বাজারগুলোতে ৯০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ব্যতিক্রম পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়া। বরবটি, টমেটোর দাম এখন ১০০ টাকা কেজি। এছাড়া সেঞ্চুরি করে প্রতি কেজি গাজর এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
মঙ্গলবার নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, যার মধ্যে লম্বাকৃতির বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৭০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকায় এবং ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস জালি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
বাজারে সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম বলতে পেঁপে তবুও কয়েক দিনের ব্যবধানে তার দামও চেপে বসেছে ক্রেতাদের ওপর। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কাঁচা কলাও ফনা তুলে বিষদাঁত নিয়ে প্রতি হালি ৪০/৪৫ থেকে বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মূলার দামও ফুলে উঠেছে কয়েকগুন। প্রতি কেজি মুলা ৭০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর মুখি চোখ রাঙ্গিয়ে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া ধাক্কাধাক্কি করছে দামের সঙ্গে প্রতি কেজি ৫৫/ ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৭০ টাকা আর কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আগের আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। অন্যদিকে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। এছাড়া ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।
রিকশাচালক জহির বলেন, ‘প্রতিদিন ৪০০ টাকা ৫০০ টাকা আয় হয় তা দিয়ে পাঁচ জনের সংসার চালানো সম্ভব নয়, ৫০০ টাকার বাজার করলেও সংসার চলেনা। ২/৩ পদের সবজি আইটেম নিলে বাকি আর কিছু থাকেনা। মাছ কেনাও এখন স্বপ্নের মত হয়ে গেছে। গরুর মাংস কেনা হয়নি চার মাসেও। মুরগি খাওয়াও সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। দু’বেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’
দিনমজুর আব্দুর রহমান বলেন, ‘অন্যের ক্ষেতে কামলা খেটে দৈনিক ৫০০ টাকা পাই। কিন্তু ছয় জনের সংসারে ডাল ভাতও জুটেনা। অন্যদিকে ছেলে-মেয়ের পড়াশুনার খরচ সব মিলে প্রতি মাসে অন্যের কাছে ধারদেনা করতে হয়। প্রতিদিন কাজ না থাকায় দুশ্চিন্তায় কাটাতে হয়।’
দোকানিরা বলেন, মালের একেকদিন একেক দাম। আমরা যা দিয়ে আনি তাতেও লাভ করতে কষ্ট হয়।
এদিকে, অস্থির বাজারে প্রশাসনের কোনো তদারকি না থাকায় এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণে করছে বলে দাবি করছেন সাধারন মানুষ।
দ্রব্যমূল্যের এমন অস্থিরতা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ক্রেতারা।